স্বাতী মালিওয়াল (বাঁ দিকে)। বৈভব কুমার (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাড়ি থেকে ১৩ মে-র যে সিসিটিভি ফুটেজ মিলেছিল, তা ‘বিকৃত’ করা হয়ে থাকতে পারে। নেপথ্যে রয়েছেন আপ সাংসদ স্বাতী মালিওয়ালকে নিগ্রহে অভিযুক্ত বৈভব কুমার। এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। তারা আরও জানিয়েছে, প্রমাণ লোপাট করতেই বৈভব এ সব করেছেন। স্বাতী অভিযোগ করেছেন, গত ১৩ মে কেজরীওয়ালের সঙ্গে বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত সচিব বৈভবের হাতে তিনি নিগৃহীত হয়েছেন।
স্বাতীর নিগ্রহের মামলায় আদালতে রিমান্ড নোট জমা করেছে দিল্লি পুলিশ। তাতে তারা জানিয়েছে, কেজরীর বাড়ি থেকে যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, তার একাংশ ছিল ‘শূন্য’ (ব্ল্যাঙ্ক)। অর্থাৎ সেখানে কিছু দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন আপ সাংসদ স্বাতী। সেখানে তিনি সরাসারি বৈভবের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করার অভিযোগ করেছেন। স্বাতী লিখেছেন, ‘‘এক কালে তিনি নির্ভয়ার জন্য সুবিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন। ১২ বছর পর ওঁরা তাঁর জন্য পথে নামছেন, যিনি সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করে দিয়েছেন। ফোন ফরম্যাট করিয়েছেন। ভাবি, মণীশ সিসৌদিয়ার জন্য এ রকম করতে পারতেন! তিনি সেখানে থাকলে আমার সঙ্গে এত খারাপ কিছু হত না।’’ দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন সিসৌদিয়া।
আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, তারা ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার হাতে পায়নি। সে কারণ ১৩ মে-র ভিডিয়ো ফুটেজ পরখ করে দেখতে পারেনি তারা। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি)-এর অধীনে। ওই বিভাগই পর্যবেক্ষণ করে। বিভাগের এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র পেনড্রাইভে পুলিশকে একটি ভিডিয়ো দিয়েছে, যাতে কিছুই দেখা যায়নি। তদন্তে দেখা গিয়েছে, ডিভিআর সংগ্রহের এক্তিয়ার নেই ওই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের।
শনিবার বৈভবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে থাকবেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বৈভব। তারা এ-ও জানিয়েছে, গত ন’বছর ধরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগত সচিব পদে ছিলেন বৈভব। তাই যথেষ্ট ‘প্রভাবশালী’ তিনি। সে কারণেই পুলিশ মনে করছে, প্রমাণ লোপাট করতে পারেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন বৈভব। সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে চলতি বছর এপ্রিলে তাঁকে অপসারণ করা হয়। এর পরেও কেন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ছিলেন তিনি, সেই প্রশ্ন তুলেছে পুলিশ।