মল্লিকার্জুন খড়্গের ছবিতে কালো কালি। ছবি: সংগৃহীত।
তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ‘টানাপড়েনে’র আবহে শনিবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে নিশানা করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তো বটেই, রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোলের মধ্যে রবিবার কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে খড়্গের ছবিতে লেপে দেওয়া হল কালো কালি! কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে। শাসকদল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রবিবার বেলায় বিধান ভবনের সামনে রাখা কংগ্রেসের ব্যানার, হোর্ডিংয়ে দেখা যায়, খড়্গের ছবিতে কেউ কালি লেপে দিয়েছেন! হোর্ডিং, ব্যানারে সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীরও মুখচ্ছবিও রয়েছে। তাতে কালির চিহ্ন নেই। বিষয়টি নজরে আসার পরেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। দফতরে থাকা কংগ্রেস কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে কালি লাগানো ওই হোর্ডিং, ব্যানার সরিয়ে দেন।
ভোটপর্বের মাঝেই শনিবার প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেস হাইকমান্ডের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দেশে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সরকারে এলে তৃণমূল কী ভাবে সমর্থন করবে, তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল সম্প্রতি। তাতে মমতাকে বিঁধেছিলেন অধীর। সেই বিতর্কে খড়্গে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে অধীরকেই কড়া বার্তা দিয়েছেন। মুম্বইয়ে শনিবার বিজেপি-বিরোধী জোট এমভিএ-র সভার পরে এই নিয়ে প্রশ্ন হওয়ায় খড়্গে বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পরে আবার বিবৃতি দিয়েছেন, সরকার তৈরি হলে তিনি তাতে যোগ দেবেন। উনি তো ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য নিয়ে ফের প্রশ্ন হওয়ায় খড়্গের মন্তব্য, ‘‘অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গে এটাই বলি, তিনি দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নন। সিদ্ধান্ত আমরা নেব, দলের হাইকমান্ড নেবে। হাইকমান্ডের তৈরি করা রাস্তা যদি কেউ অনুসরণ করতে না চায়, তবে তাকে বেরিয়ে যেতে হবে!’’
বহরমপুরে বসে অধীরও পত্রপাঠ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, এআইসিসি-র ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে তিনিও ‘হাই কমান্ডের লোক’! তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসকে কেউ খতম করবে, আমরা তাঁকে খাতির করব, তা তো হতে পারে না! আমার বিরোধিতা, নৈতিক বিরোধিতা। আমার বিরোধিতায় কোনও ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। আমার বিরোধিতা পশ্চিমবঙ্গে দলকে রক্ষা করার জন্য লড়াইয়ের অঙ্গ। এই লড়াই আমি কোনও ভাবেই থামাতে পারি না। কারণ, আমি দলের এক জন পদাতিক সৈনিক।” দলের সৈনিক হিসেবে এই লড়াই তিনি চালিয়ে যাবেন বলেও উল্লেখ করেছেন অধীর। এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসার পরেই বিধান ভবনে খড়্গের ছবিতে কালো কালি লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।