গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুখবন্ধ খামে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র রিপোর্ট পেশ করল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী অমিত শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এএসআই-এর তরফে বারাণসী জেলা আদালতের বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেসের কাছে ওই রিপোর্ট হয়েছে। এর আগে কয়েক দফা রিপোর্ট পেশের সময়সীমা পেরনোর পরে আদালতের অনুমতিক্রমে বাড়তি সময় নিয়েছিল এএসআই। মুখবন্ধ খামে পেশ করা রিপোর্টে কী রয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি এএসআই-এর তরফে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই বারাণসী জেলা আদালতের বিচারক বিশ্বেস হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘সিল’ করা এলাকার (ওজুখানা এবং ভূগর্ভস্থ জলাধারের তথাকথিত শিবলিঙ্গ) বাইরে এএসআই-কে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মসজিদ কমিটি। গত ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার জন্য বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশের (জ্ঞানবাপী চত্বরে পুরাতাত্ত্বিক সমীক্ষা) উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। ওই সময়সীমার মধ্যে এ বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
ইলাহাবাদ হাই কোর্ট গত ৩ অগস্ট ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র আবেদন খারিজ করে এএসআই সমীক্ষায় ছাড়পত্র দিয়েছিল। ৪ অগস্ট থেকে মসজিদ চত্বরের ‘সিল’ করা এলাকার বাইরে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছিল এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ দল। আদালত ৫ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও এর আগে দু’দফায় আবেদন জানিয়ে সমীক্ষার সময়সীমা বাড়িয়েছে এএসআই। ২ নভেম্বর বারাণসী আদালতকে এএসআই জানায় সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হলেও রিপোর্ট তৈরির জন্য সময় চাই। বিচারক বিশ্বেস এর পর ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু তা ফের বৃদ্ধির আবেদন জানানো হল।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের মে মাসে মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর। সেই সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শেষ হওয়ার পরে ২০২২ সালের ২০ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পেয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত।