বাঁ দিক থেকে, শি জিনপিং, জেনারেল আসিম মুনির এবং জো বাইডেন। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের মাটিতে চিনা ফৌজের ‘তৎপরতা’ নিয়ে কড়া বার্তা দিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার। সে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওয়াশিংটন সফররত পাক সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনিরকে পেন্টাগনের তরফে সুস্পষ্ট ভাবে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে দাবি, আমেরিকার তরফে জেনারেল মুনিরকে বলা হয়েছে, পাক মাটিতে চিনের ‘গতিবিধি’ যেন শুধুমাত্র চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরেই (সিপিইসি) সীমাবদ্ধ থাকে। পাক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চিনা হস্তক্ষেপের প্রমাণ মিললে ভবিষ্যতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলেও পাক সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’-এ প্রকাশিত একটি খবরে ইঙ্গিত।
ওই খবরে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড ব্লম গোপনে বালুচিস্তানের গদর বন্দর পরিদর্শন করে সেখানে চিনা সামরিক বাহিনীর গতিবিধি সম্পর্কে নিঃশংসয় হন। তার জেরেই জেনারেল মুনিরকে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের এই হুঁশিয়ারি। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার এবং তালিবানের ক্ষমতা দখলের পরে এই প্রথম কোনও পাক সেনাপ্রধান সরকারি সফরে ওয়াশিংটনে গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পে হাজার হাজার চিনা কর্মী পাকিস্তানের করাচি, বালুচিস্তান, গিলগিট-বালটিস্তানে কাজ করছেন। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ), তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির হামলার শিকার হয়েছেন চিনা নাগরিকেরা। তারই জেরে ২০২২ সালে পাকিস্তানের মাটিতে চিনা সেনা ছাউনি তৈরিতে অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদের কাছে ‘আবেদন’ জানিয়েছিল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার। এর পরেই গোপনে পাকিস্তানে চিনা ফৌজের তৎপরতা শুরু হয় বলে অভিযোগ।
৬০০০ কোটি ডলারের চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পে ইতিমধ্যেই একাধিক জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৩ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি চিনের উইঘুর অঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের গদর বন্দরকে যুক্ত করবে। এই সড়কের অনেকটাই যাচ্ছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে। তাই দিল্লি বরাবর এই সড়ক পথ তৈরি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। যদিও তাতে কর্ণপাত করেনি ইসলামাবাদ এবং বেজিং।