বাঘ দেখতে অভয়ারণ্যে জিপসিতে চেপে পর্যটকেরা। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অভয়ারণ্যের ভিতরে বাঘিনি এবং তার শাবকদের পথ আটকানোর অভিযোগে এ বার স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করল বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। মহারাষ্ট্রের উমরেড করন্ডলা অভয়ারণ্যে সম্প্রতি একটি বাঘিনি (এফ২) এবং তার পাঁচ শাবকের পথ আটকানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় বন দফতরের জিপসি গাড়ির চালক এবং গাইডদের আচরণ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত।
এই জিপসি গাড়িগুলিতে করেই পর্যটকদের অভয়ারণ্যে ঘোরানো হয়। অভিযোগ, গত ৩১ ডিসেম্বর জিপসি গাড়িতে থাকা কিছু পর্যটক বাঘিনির পথ আটকান। বাঘিনির পথ আটকানোর ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া এক মরাঠি দৈনিকেও এই অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য যে নিয়ম মানা প্রয়োজন, তার তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ। ওই আচরণের জন্য বাঘিনি এবং তার শাবকদের কষ্ট হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর প্রথমে কিছুটা দায়সারা মনোভাব দেখিয়েছিলেন ঘটনায়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ্যে আসার পর গাড়ির চালক এবং গাইডদের মাত্র সাত দিনের জন্যই নিলম্বিত করেন তিনি। পরে অবশ্য শাস্তি বৃদ্ধি হয়। নিলম্বিত করার মেয়াদ তিন মাস বর্ধিত হয় এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
বিচারপতি নিতীন ডব্লিউ সাম্ব্রে এবং বিচারপতি বৃষালী ভি জোশীর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনায় মহারাষ্ট্রের বন দফতরের প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে গাফিলতি রয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, মনে হচ্ছে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে-পড়া ভিডিয়ো এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে বন দফতর এ বিষয়ে জানতে পেরেছে। তার পরে জিপসির চালক এবং গাইডদের শাস্তির নির্দেশে বদল করা হয়েছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তার ব্যাখ্যা দিয়ে ইতিমধ্যে হলফনামা আকারে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন মুখ্য বন সংরক্ষক। বাঘিনি এবং শাবকদের সুরক্ষার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে। অভয়ারণ্যের যে অঞ্চলে বাঘিনি ও তার শাবকেরা রয়েছে, সেখানে সাধারণের যাওয়া আপাতত নিষিদ্ধ রাখতেও প্রস্তাব দিয়েছে আদালত। আগামী ২০ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।