গত বছর জুনে শিবসেনার বিধায়কদের ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন একনাথ শিন্ডে। বিজেপির সাহায্য নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরেকে। ফাইল চিত্র।
দলত্যাগ বিরোধী আইনে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-সহ ১৬ জন ‘বিদ্রোহী’ শিবসেনা বিধায়কের পদ খারিজ করা হতে পারে কি না, বৃহস্পতিবার সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার রাহুল নরবেকর কার্যত শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুললেন! তাঁর মন্তব্য, ‘‘কোনও বিধায়ক পদে বহাল থাকবেন, না কি বরখাস্ত হবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার একমাত্র স্পিকারের।’’
বিজেপি বিধায়ক নরবেকরের এই মন্তব্য ‘অসাংবিধানিক’ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। কারণ অতীতে বিধায়কদের পর খারিজের বিষয়ে কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার কেজি বোপাইয়ার নির্দেশ খারিজ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ পালিতও হয়েছিল। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কদের পদক্ষেপকে ‘দলত্যাগ বিরোধী’ বললে তাঁরা পদ হারাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বল হতে উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন ‘মহা বিকাশ অঘাড়ী’ জোটের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা।
গত বছর জুনে শিবসেনার বিধায়কদের ধাপে ধাপে ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিন্ডে। বিজেপির সাহায্য নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরেকে। সে দিন শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামী ‘প্রথম দফার বিদ্রোহী’ ১৬ শিবসেনা বিধায়কের সেই পদক্ষেপ ‘দলত্যাগ বিরোধী কার্যকলাপ’ ছিল কি না, বৃহস্পতিবার সেই রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছে।
শিন্ডে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের সময় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার (তথা ভারপ্রাপ্ত স্পিকার) নরহরি সীতারাম জিরওয়াল দলত্যাগী বিধায়কদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছিলেন। কিন্তু শিন্ডে শিবির জানিয়েছিল, ডেপুটি স্পিকারকে সরানোর জন্য আগেই বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করেছে তারা। তাই তাঁর কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার নেই। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কেই হাতিয়ার করেছিল তারা।
২০১৬ সালে অরুণাচল প্রদেশে ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে ‘নাবাম রেবিয়া বনাম ডেপুটি স্পিকার’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি জেএস খেহর এবং বিচারপতি দীপক মিশ্রের রায় ছিল, ‘‘স্পিকারকে পদচ্যুত করার জন্য প্রস্তাব জমা পড়লে দলত্যাগী বিধায়করা দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় পড়বেন কি না, তা নিয়ে তিনি পদক্ষেপ করতে পারবেন না।” আদালতের বৃহত্তর সাংগঠনিক বেঞ্চে এই রায়কে পুনর্বিবেচনা এবং পুনর্মূল্যায়ন করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল উদ্ধব শিবির। বৃহস্পতিবার সেই মামলারই রায় ঘোষণা করা হবে।