সঙ্ঘের মহিলা সংগঠনের দাবি, সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে হিন্দু বিবাহ আইনে কোনও বদল ঘটানো চলবে না। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিলে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিপন্ন হয়ে পড়বে বলে অভিযোগ তুলল আরএসএসের মহিলা শাখা রাষ্ট্র সেবিকা সমিতির সামাজিক সংগঠন সংবর্ধিনী ন্যাস। সংগঠনের তরফে তাদের এই অবস্থানের কথা লিখিত ভাবে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে— সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে যেন হিন্দু বিবাহ আইনে কোনও বদল ঘটানো না হয়।
প্রসঙ্গত, সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে আরএসএস এবং বিজেপি প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়েছে। তাদের সংগঠনগুলিও নানা স্তরে এ নিয়ে প্রচারও চালিয়েছে। এ বার সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকারের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাল সঙ্ঘের মহিলা শাখা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সঙ্ঘের একটি সংগঠন দাবি করেছে, তাদের সংগঠনের অধীনে সারা দেশে ৩০০ জনেরও বেশি ডাক্তার সমীক্ষা চালিয়ে জানিয়েছেন, সমকামিতা একটি ‘মানসিক ব্যাধি’। সমলিঙ্গে বিয়েকে বৈধ করা হলে ‘রোগীর নিরাময়ের পরিবর্তে সমাজে ব্যাধি বাড়তে পারে’ বলেও তারা দাবি করেছিল। প্রসঙ্গত, মাত্র আড়াই দিনের মধ্যে সঙ্ঘের ওই সংগঠনটির চিকিৎসকেরা সমীক্ষার পালা সেরেছিলেন।
নরেন্দ্র মোদী সরকারও প্রথম থেকেই সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে জানানো হয়েছিল— সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতির দাবি নেহাতই ‘শহুরে অভিজাত সমাজের ভাবনা’। প্রধান বিচারপতি অবশ্য প্রথম থেকেই কেন্দ্রের মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। বলেছেন, ‘‘সমকামিতা যে কেবল শহুরে বিষয়, এমন কোনও পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘সমকামী সম্পর্কগুলি কেবল শারীরিক নয়, মানসিক, স্থিতিশীল সম্পর্কও।’’ আবার কখনও তাঁর মন্তব্য, ‘‘নারী-পুরুষের সংজ্ঞা শুধু মাত্র জননাঙ্গের উপর নির্ভর করে না।’’
এমনকি, কেন্দ্রের তরফে সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি নিয়ে রাজ্যগুলির মত জানতে চাওয়ার পক্ষে সওয়াল করা হলেও তা সরাসরি খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। বুধবার কেন্দ্র জানিয়েছে, কংগ্রেস পরিচালিত রাজস্থান সরকার সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতির বিরোধী। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংবর্ধিনী ন্যাস নামে সঙ্ঘ পরিবারের ওই সংগঠন জানিয়েছিল, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে পড়তে হবে রাম, হনুমান কিংবা শিবাজির সংগ্রামের কাহিনি। তার ফলে জন্মের আগে থেকেই গর্ভের সন্তান ভারতীয় সংস্কারে অভ্যস্ত ও দেশপ্রেমী হয়ে উঠবে। এমন যুক্তি দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ‘গর্ভ সংস্কার’ কর্মসূচি শুরু করে সংবর্ধিনী ন্যাস।