লিভারের রোগের দাওয়াই কি সবুজ শাকসব্জি। ছবি: সংগৃহীত
আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম বা শারীরিক কসরতের অভাবে যে সব অসুখ সহজেই শরীরে বাসা বাঁধে, তার মধ্যে অন্যতম লিভারের অসুখ। অল্প বয়েসেও এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই অসুখের লক্ষণ তেমন ভাবে বোঝাও যায় না।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
লিভারে মাত্রাতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফ্যাটি লিভারের থেকে শুরু করে লিভারের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে এর ফলে। অনেকেরই ধারণা, কেবলমাত্র মদ্যপানের অভ্যাসের কারণেই এই অসুখ হয়। কিন্তু এ ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। ফ্যাটি লিভার দুই ধরনের হয়। অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভারে চর্বি জমলে, তা অ্যালকোহলিক ফ্যাট। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি মূলত খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত তেল বা চর্বি জাতীয় উপাদান বেড়ে গেলে হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। এই অসুখ আবার বংশগত কারণেও হতে পারে। তবে খাওয়াদাওয়ায় কিছু বদল আনলেই লিভারের অসুখের ঝুঁকি কমতে পারে বলে জানাচ্ছে গবেষণা।
সম্প্রতি ‘এনআইএইচ-এএআরপি ডায়েট অ্যান্ড হেলথ’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, সবুজ শাকসব্জি লিভারের অসুখের সম্ভাবনা কমাতে পারে। ৪,৭০,৬৫৩ জনকে নিয়ে একটি গবেষণা চালানো হয়ছিল প্রায় ১৫ বছর ধরে। অংশগ্রহণকারীদের সকলের বয়স ছিল ৫০ থেকে ৭১ বছরের মধ্যে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার উপর কড়া নজরদারি চালানো হয়। ১৫ বছর পর দেখা গিয়েছে, এঁদের মধ্যে প্রায় ৮৯৯ জন লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত, ৯৩৪ জন লিভারের অন্য জটিল রোগে ভুগছেন।
গবেষণায় জানাচ্ছে, যাঁদের খাদ্যতালিকায় শাকসব্জির পরিমাণ বেশি ছিল তাঁদের লিভারের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম দেখা গিয়েছে।
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, রোজকার খাদ্যতালিকায় ২২৫ গ্রাম শাকসব্জির পরিমাণ বাড়াতে পারলে লিভারের ক্যানসার কিংবা লিভারের অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমবে। খাদ্যতালিকায় লেটুস, গাজর, ব্রকোলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদি থাকলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। এই সব শাকসব্জিতে ‘সালফোরাফিন’ নামক যৌগ ভাল মাত্রায় থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।