জবাফুলের চা খেতে পারেন ডায়াবেটিকেরাও। ছবি: সংগৃহীত।
চা খেতে ভালবাসেন। তাই শহরের অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা অনেক ক্যাফেতেই ঢুঁ মারেন। ইদানীং ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি চা খাওয়ার চল হয়েছে। যদিও চা পাতার সঙ্গে নানা ধরনের ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে ব্যবহার করার রীতি নতুন নয়। চা পাতার সঙ্গে ক্যামোমাইল, জুঁই, অপরাজিতা, গোলাপ ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে, ব্লেন্ড করে নানা ধরনের পানীয় তৈরি করা হয়। সেই তালিকায় এখন যোগ হয়েছে জবাফুলও। শুধু যে স্বাদ কিংবা গন্ধের জন্য এই ফুলগুলি ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু নয়। এই সব চায়ের নানা রকম ঔষধি গুণ রয়েছে। অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর জবাফুলের চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জবাফুলে থাকা বিশেষ একটি যৌগ ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিকে প্রতিরোধ করতে পারে।
১) ওজন কমাতে সাহায্য করে:
অনেক দিন ধরেই ওজন কমানোর উদ্দেশ্য নিয়ে শরীরচর্চা করছেন, কিন্তু লাভ কিছুই হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জবা ফুলের চা কিন্তু আপনার কাজে লাগতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, বিপাকহারের মান ভাল করতে পারে জবাফুলের মধ্যে থাকা যৌগগুলি। বিপাকহার ভাল হলে ওজন তো কমেই, পাশাপাশি নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকলে, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করে জবাফুলের পাপড়ি দিয়ে বানানো চা।
২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:
দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন? সকালে জলখাবারের পর নিয়মিত ওষুধও খেতে হয়? চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ যেমন খাচ্ছেন, তার সঙ্গে খেতে শুরু করুন জবাফুলের চা। অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ এই চা খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকে উদ্বেগ, ‘হাইপার টেনশন’-এর সমস্যা।
৩) মূত্রনালির সংক্রমণ রোধ করে:
বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় খুব বেশি। মূত্রনালির সংক্রমণ কমাতে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বার বার নানা কারণে এই জাতীয় ওষুধ খাওয়াও ভাল নয়। তাই মূত্রনালির সংক্রমণ যদি খুব মারাত্মক আকার ধারণ না করে থাকে, সে ক্ষেত্রে জবাফুলের চা খেয়ে দেখতে পারেন।
৪) রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখে:
‘ডিপার্টমেন্ট অফ ফার্মাকগনোজ়ি অ্যান্ড ফাইটোকেমিস্ট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, জবা ফুলে রয়েছে অলিফেনল্সএবং অরগ্যানিক অ্যাসিড। এই উপাদানগুলি ইনসুলিন হরমোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেই কথা মাথায় রেখে পুষ্টিবিদেরাও ইদানীং জবা ফুলের চা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৫) তারুণ্য ধরে রাখে:
জবাফুল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। তাই এই ফুল দিয়ে তৈরি চায়ে নিয়মিত চুমুক দিলে শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতা বজায় থাকে। ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায় না। কোষের ক্ষয়ও রুখে দেওয়া যায়। সংখ্যায় বয়স বাড়লেও বাইরে থেকে দেখে তা বোঝা যায় না।