একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন? —প্রতীকী ছবি।
হাঁটতে গিয়ে কেউ কয়েক পা গিয়েই হাঁপিয়ে ওঠেন। কেউ আবার দিব্যি মাইলের পর মাইল হেঁটে ফেলেন। শরীরচর্চার জন্য হাঁটাহাঁটি খুব জরুরি। কিন্তু হাঁটতে গিয়ে যদি দ্রুত হাঁপিয়ে যান, তা হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
হাঁপ ধরার কারণ
ফিটনেসের অভাব, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কম হওয়া, হাঁপানির সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের দুর্বলতা, এমন নানা কারণে খানিকটা হাঁটলেই কেউ হাঁপিয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি বাড়তি ওজনের জন্যও সমস্যা হতে পারে।
সঠিক ভাবে হাঁটার নিয়ম-কানুন
উপযুক্ত শরীরচর্চার অভাব, হাঁটাহাটির অনাভ্যাসের কারণ। আচমকা কেউ লম্বা রাস্তা হাঁটতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই হাঁটার পরিধি ধীরে ধীরে বাড়ানো দরকার।
শুরুটা হোক ধীরেসুস্থে
শরীরচর্চার জন্য হয়তো হাঁটাহাটি শুরু করলেন। ঘাম ঝরাতে শুরুতেই প্রচণ্ড গতিতে হাঁটতে শুরু করলে, সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। তাই শুরুটা ধীরেসুস্থে হওয়া প্রয়োজন। প্রথমে স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন। এ ভাবেই দিন কয়েক অভ্যাস করতে পারেন। তার পর গতি বাড়াতে পারেন।
প্রাণায়াম
গভীর ভাবে শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ছাড়ার অভ্যাস মন শান্ত করে। এ ছাড়াও নিয়মিত প্রাণায়ামের অভ্যাসে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে অক্সিজেনের জোগান অব্যাহত রাখে ফুসফুস। ফলে গুরত্বপূর্ণ অঙ্গটি সক্রিয় থাকলে, দ্রুত হাঁপিয়ে যাওয়ার সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
সঠিক ভঙ্গি
হাঁটারও সঠিক ভঙ্গি আছে। মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটতে হবে। হাঁটার সময় ঝুঁকে পড়লে বা সঠিক ভাবে না হাঁটলে ফুসফুসের উপর চাপ পড়তে পারে। যার ফলে দ্রুত হাঁপিয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিরতিও প্রয়োজন
একটানা হাঁটলে যে কেউ হাঁপিয়ে যাবেন। তাই শরীরচর্চা হোক বা হাঁটাহাটি, দ্রুত গতিতে হাঁটুন বা আস্তে, কিছুটা সময় অন্তর বিরতি নেওয়া দরকার। আবার ২ মিনিট দ্রুত হাঁটার পর ১ মিনিট গতি কমিয়ে নিতে পারেন। এই পদ্ধতি শ্বাসের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৫ মিনিট ‘ওয়ার্ম-আপ এক্সারসাইজ়ের’ পর হাঁটা শুরু করতে পারেন। ২ মিনিট দ্রুত হেঁটে ১ মিনিট ধীরে, এই ভাবে হাঁটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
জল খাওয়া প্রয়োজন
শারীরিক ক্লান্তি, শরীরে জলের অভাবও হাঁটতে হাঁটতে হাঁপিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত জল খাওয়া জরুরি। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সাধারণত ২-৩ লিটার জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য, শর্করা, প্রোটিন ও ফ্যাটের সঠিক সমন্বয় শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এগুলির অভাব থাকলেও হাঁটতে গিয়ে কেউ দ্রুত হাঁপিয়ে উঠতে পারেন।
রাস্তা ও জুতো
হাঁটার ক্ষেত্রে রাস্তা ও সঠিক জুতো দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। এবড়োখেবড়ো রাস্তায় হাঁটতে গেলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আবার জুতো ঠিক না হলে, দুই পা চলেও কষ্ট হতে পারে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। দীর্ঘ দিন হাঁটাহাটি না করে, এক দিনে বেশি হাঁটতে গেলে হাঁপিয়ে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দেখা যায়, সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।