রুকস্যাক কেনার সময় কোন কোন জিনিস মাথায় রাখা প্রয়োজন? ছবি: সংগৃহীত।
ট্রেকিং করতে গেলে পিঠের ব্যাগেই ভরে ফেলতে হয় যাবতীয় জরুরি জিনিস। পানীয় জল থেকে পোশাক, আনুষঙ্গিক সমস্ত জিনিস শুধু সঠিক ভাবে ভরা নয়, প্রয়োজনে হাতের কাছে পাওয়াটাও জরুরি। ট্রেকিং-এর প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন খাপখোপ যুক্ত রুকস্যাক মেলে। কিন্তু কী ভাবে বুঝবেন, কোনটা আপনার উপযুক্ত? রুকস্যাক কেনার আগে, কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন?
ট্রিপ কত দিনের, তার উপরেই নির্ভর করবে রুকস্যাকের আকার। এক থেকে দু’দিনের ট্রেকে ৩০ লিটারের রুকস্যাকেই কাজ চলতে পারে। তবে সাত বা তার চেয়ে বেশি দিনের ট্রেকে তো আর ছোট রুকস্যাকে কাজ চলতে পারে না!
ছোট ট্রেক- এক অথবা দু’দিনের ট্রেকিংয়ের জিনিস নিতে গেলে মোটামুটি ৫ কেজি ওজনের মালপত্রই যথেষ্ট। সে ক্ষেত্রে মোটামুটি ২০-৩০ লিটারের রুকস্যাকেই কাজ চলে যাওয়ার কথা। ট্রেকিংয়ের শর্তই হল, অত্যাবশ্যক জিনিস ছাড়া মালপত্র না নেওয়া। যে হেতু পুরো ভার নিজেকেই বইতে হবে এবং সেই ভার নিয়েই হাঁটতে হবে, তাই ব্যাগ যত হালকা হবে, ততই সুবিধা।
দীর্ঘ ট্রেক- ট্রেক যখন ৫ দিনের বেশি হবে, তখন কিন্তু যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করে জিনিসপত্র গুছোনো প্রয়োজন। স্বাভাবিক ভাবেই এ ক্ষেত্রে বেশ বড় রুকস্যাক দরকার পড়বে। লম্বা ট্রেকিংয়ের জন্য ৪০, ৫০, ৬০ লিটার পর্যন্ত রুকস্যাক নেওয়া যেতে পারে। আকার অনুযায়ী ৮ থেকে ১৩ কেজি মালপত্র এতে ভরা যাবে। দিন পাঁচেক বা সাত দিনের ট্রেকিংয়ে ৫০ লিটারের ব্যাগে কাজ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে তার চেয়েও লম্বা ট্রেকে ৬০ লিটারের বেশি রুকস্যাক প্রয়োজন।
অভিযান
তবে কোনও লম্বা ও কঠিন ট্রেকিংয়ে গেলে রুকস্যাকের আয়তন বাড়বে। তখন ৬০ লিটারের চেয়ে বড় ব্যাগ বেছে নিতে হবে। ৯০ লিটার পর্যন্ত রুকস্যাক বেছে নিতে পারেন। ১৫ থেকে ৩০ কেজি মালপত্র ধরবে এতে।
‘টরসো লেন্থ’ মেপে নেওয়া দরকার
বড় ব্যাগে বেশি জিনিস ধরবে, জানা কথাই। কিন্তু যিনি ব্যাগ নেবেন, তাঁর দৈহিক উচ্চতার বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। রুকস্যাক কেনার সময় অনেকেই সেই বিষয়টি মাথায় রাখেন না। তাই দেখা যায়, কারও রুকস্যাক পিঠ থেকে ঝুলে গিয়েছে, কোমর থেকে নেমে গিয়েছে। কিন্তু, ‘টরসো লেন্থ’ অনুযায়ী রুকস্যাক কিনলে লম্বা পথে হাঁটতে সুবিধা হয়।
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ‘টরসো লেন্থ’ কতটা হয়। —প্রতীকি ছবি।
ইদানীং, শরীরের আকার, উচ্চতা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের রুকস্যাক পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ‘টরসো লেন্থ’ মেপে রুকস্যাক কেনা জরুরি।
কী ভাবে মাপবেন ‘টরসো লেন্থ’
মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে দু’হাত কোমরে রাখতে হবে। কাঁধ যেখানে ঘাড়ের সঙ্গে মিশেছে, মেরুদণ্ডের সেই অংশ থেকে ফিতে নিয়ে আসতে হবে কোমরে হাত রাখা অংশে, একদম মেরুদণ্ড বরাবর লম্বা ভাবে। তা হলেই পাওয়া যাবে টরসো লেন্থ। রুকস্যাক কখনওই টরসো লেন্থের চেয়ে নীচের দিকে ঝুলে থাকা কাম্য নয়। কাঁধের ছাড়িয়ে রুকস্যাক উপরের অংশ উঠে থাকলেও খুব একটা অসুবিধা নেই, তবে কোমরের নীচে নেমে গেলে তা নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে সমস্যা হতে পারে।
রুকস্যাকের বেল্ট
রুকস্যাকে কিছু জিনিস ভরে পিঠে নিয়ে প্রতিটি ফিতে লাগিয়ে দেখতে হবে, শরীরের প্রতিটি অংশে ফিতে ও বেল্ট ঠিকমতো বসছে কি না। খালি রুকস্যাকে এই পরীক্ষা করলে সঠিক না-ও বোঝা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে রুকস্যাকে মালপত্র ভরে পরীক্ষা করা প্রয়োজন।