কাজের চাপ বাড়লে রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ির সকলেরই ডায়াবিটিস রয়েছে। বংশানুক্রমে সেই রোগ এই প্রজন্মেও বিস্তার লাভ করতে পারে। সেই ভয়ে চায়ে চিনি খাওয়া ছেড়েছেন। পছন্দের মিষ্টি খান গুনে গুনে। কৃত্রিম শর্করা রয়েছে, এমন খাবার বা পানীয় জীবন থেকে বাদ দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবিটিসের সঙ্গে শুধু খাওয়ার সম্পর্ক নয়। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকলেও কিন্তু রক্তে শর্করার পরিমাণ চুপিসারে বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঘরে-বাইরের সমস্ত দায়দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে অনেক সময়েই পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবনের ছন্দপতন হয়, ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে মানসিক চাপ সমানে বাড়তে থাকে। শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মে সহায়ক হরমোনগুলির ক্ষরণ এবং কার্যক্ষমতাও নষ্ট হয়।
ডায়াবিটিসের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ইনসুলিন হরমোন। এই হরমোনটি সঠিক ভাবে কাজ না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে পড়ে। উপরন্তু বাড়তে থাকা মানসিক চাপ কর্টিসল হরমোন ক্ষরণের পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়। এই দুই হরমোনের চাপে ডায়াবিটিসও লাগামছাড়া হয়ে পড়ে। পাশাপাশি, শরীরে বাড়তে থাকে প্রদাহ। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।
কাজের চাপ বাড়তে থাকলে কী ভাবে তা ইনসুলিন হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে, তা বুঝিয়ে বললেন চেন্নাইয়ের ‘এইচসিএল হেল্থকেয়ার’-এর ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক এস জয়কুমার। তিনি বলেন, “কাজের চাপ বাড়তে থাকলে শরীরচর্চা করার সময় পাওয়া যায় না। কসরতের অভাবে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে আসে। ফলে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আবার কাজের চাপে রাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারেন না অনেকে। তার প্রভাব যেমন হরমোনের উপর পড়ে, তেমন বিপাকহারও কমে যায়। এই সব ফ্যাক্টর টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার দিকে কয়েক কদম এগিয়ে দেয়।”