সুজন নীল মুখোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
প্রতিবাদ সুজন নীল মুখোপাধ্যায়ের প্রত্যেক নাটকে। সেটা ‘মহাত্মা বনাম গান্ধী’ হতে পারে কিংবা ‘জগন্নাথ’। মঞ্চ ও ছায়াছবি দুনিয়ার খ্যাতনামী তাই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলেও পুরোভাগে ছিলেন। সেই অনুভূতি নিয়ে পঞ্চমীতে তাঁর নতুন নাটক ‘মৃতার ডায়েরি’ মঞ্চস্থ হচ্ছে। নাটকে ১৯৭৩ সালের এক ইটালীয় অভিনেত্রী ফ্রাঙ্কা রামের হাত ধরে উঠে আসবে আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের ঘটনা। জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করার আগে ভয় করেনি? যদি সরকারের বিরাগভাজন হন? আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল সুজন নীলের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে সাহসী জবাব, “আগেও যে রাজ্য সরকারের খুব কাছের কেউ ছিলাম এমন নয়। প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলানোর পর আরও কোপে পড়েছি, বুঝতে পেরেছি। ফলে, আর ভয় পাই না।”
কী ধরনের কোপে পড়েছেন তিনি? উত্তর দিতে মিনিট দুয়েক সময় নিয়েছেন। তার পর বলেছেন, “আমার নাট্য উৎসব নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কিছু সমস্যা তৈরি করা হয়েছিল। যে কারণে নির্দিষ্ট সময়ের কিছু বদল ঘটাতে বাধ্য হয়েছিলাম। তখনও আমার পাশে জনতা জনার্দন। এখনও তাই। ওঁদের মুখের দিকে তাকালে সব দ্বিধা মুছে যায়।” সেই সাহস থেকেই ‘মৃতার ডায়েরি’তে উঠে আসবে সেই ইতালীয় অভিনেত্রীর জীবন যিনি ১৯৭৩ সালে ধর্ষণের শিকার হন। ১৯৭৫ সালে সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে একটি ডায়েরি লেখেন তিনি। অভিনেত্রীর জীবন প্রেক্ষাপটে রেখে বিশ্বের সমস্ত ধর্ষিতার গল্প শোনাবেন তিনি। মৃতা কখনও ফিরে আসেন না। কিন্তু ফিরতে পারলে তিনি কী কী দেখতেন, আদালতে কী কী প্রশ্ন তুলতেন— সব উঠে আসবে এই নাটকে। একক নাটকের মুখ্য আকর্ষণ অভিনেতার অভিনেত্রী স্ত্রী নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়।
এই নাটকের মাধ্যমে চেতনা নাট্যগোষ্ঠী সমাজের চেতনা ফেরাতে পারবে? প্রশ্ন শুনে সুজন নীলের মত, “জানি না। তবে আমি সেই চেষ্টাই করব।” পরে আরও যোগ করেছেন, প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো করে প্রতিবাদী। কেউ কলম ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কারও প্রতিবাদের হাতিয়ার গান। উদাহরণ হিসাবে অরিজিৎ সিংহের কথা বলেছেন। এই প্রতিবাদের আবহে লেখা তাঁর ‘আর কবে’ গানটি জনমনে সাড়া জাগিয়েছে। সুজন নীল নাটক জানেন, অভিনয় পারেন। তিনি তাই এই দুই মাধ্যমকে অস্ত্র বানিয়েছেন। আশা, একদিন নিশ্চয়ই সমস্ত নারী অন্যায়-অবিচারের বিচার পাবেন।