রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে এল সিআইডি এবং ফরেন্সিক দল। নিজস্ব চিত্র
বর্ধমানের রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে এল সিআইডি এবং ফরেন্সিক দল। মঙ্গলবার নিহত ও আহত শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী-সহ সদস্যারা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের দল রসিকপুরে ঘটনাস্থলে যায়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায়কে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা সোমবারের বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি বেশ কিছু সময় ধরে সেখান থেকে নানা নমুনাও সংগ্রহ করেন। বিস্ফোরণস্থলে যে গর্ত তৈরি হয়েছে, তার মাপও নেন ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা।
চিত্রাক্ষ বলেন,“আমরা বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখেছি। বিস্ফোরণের অভিঘাতে তৈরি হওয়া গর্তের মাপ নিয়েছি। সেখানের মাটির নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, পাথরের কুচো, লোহার স্প্রিং।’’ সেগুলি বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল বলেই মনে করছে ফরেন্সিক দল। চিত্রাক্ষ জানান, ল্যাবরেটরিতে ওই সব নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষাতেই ধারণা পাওয়া যাবে, কী ধরনের বোমা রাখা হয়েছিল এবং বিস্ফোরণের তীব্রতা কতটা ছিল। চিত্রাক্ষেরা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে সিআইডি-র আধিকারিকরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন।
রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা মঙ্গলবার জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহার সঙ্গে তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে বোমা বিস্ফোরণে জখম শিশু শেখ ইব্রাহিমের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর রসিকপুরের বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখেন। নিহত শিশু শেখ আফরোজের বাড়িতেও যান। আফরোজের মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সমবেদনা জানান অনন্যা। তবে এত কিছু সত্ত্বেও বোমা বিস্ফোরণের আতঙ্ক পিছু তাড়া করে বেড়াচ্ছে রসিকপুরের বাসিন্দাদের। নিহত শিশুর পরিবার-সহ এলাকার বাসিন্দারা চাইছেন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
রসিকপুরে একটি ক্লাব ঘরের কাছে সোমবার বেলা ১১টার পর পর পর দু’টি বোমা ফাটে। সেই বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই ৭ বছরের আফরোজের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় মারাত্মক জখম ৮ বছরের ইব্রাহিম বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ভোটের মুখে এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা। ঘিরে রাখা হয় বিস্ফোরণস্থল । তারই মধ্যে নির্বাচন কমিশনও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করে।
কী ভাবে বোমা ওই জায়গায় এল, কারা বোমা রাখতে পারে তার তদন্ত করছে জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার ভাস্কর বলেন ,“হাঁড়ি বা কলসির মত কোনও বস্তুতে একটি বোমা রাখা ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। সেটিকে বল ভেবে খেলতে গিয়েই এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরেক শিশু জখম হয়েছে। বোমা কতটা শক্তিশালী ছিল এবং তার বিস্ফোরণের তীব্রতা বা কতটা শক্তিশালী সেই বিষয়ে সিআইডি এবং ফরেন্সিক দল অনুসন্ধানে নেমেছে।’’