মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে।
কোনও তথ্য এবং প্রমাণ ছাড়া যাঁরা তৃণমূলকে এবং তাঁকে ‘চোর’ বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। মঙ্গলবার শ্রীরামপুরে জনসভা ছিল মমতার। তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তৃণমূলকে ‘চোর’ বলছেন, তাঁদের তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না। মানহানির মামলা করবেন। যে সব সংবাদমাধ্যমে কোনও প্রমাণ ছাড়া সেই সব দাবি ছেপে দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবেন।
মমতা বলেন, ‘‘রোজ বলছে তৃণমূল চুরি করেছে। কোথায় চুরি করেছে? কার পকেটে চুরি করেছে জিজ্ঞাসা করুন। হাওয়া তুলে দিয়েছে। চুরি করেছে প্রমাণ কোথায়? আমি আদালতে যাচ্ছি মানহানির মামলা করতে। রোজ সংবাদপত্রে উল্টোপাল্টা বলা! আমি নিজে মামলা করছি। প্রকাশক-প্রচারক নেই, সেই কাগজগুলো টাকা পাচ্ছে, আর ছেপে দিচ্ছে। আমি ছাড়বার পাত্রী নই। আমি এ বার আঁটসাঁট করে ধরব। আমার নামে প্রমাণ নেই, তথ্য নেই আর চোর বানিয়ে দিল! আমি কারও পয়সায় এক কাপ চা-ও খাই না। তাকে বলছে চোর!’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা সাত বারের সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন। রাজ্যের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, পেনশন এবং বেতন বাবদ তাঁর মাসিক প্রাপ্য তিন লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই টাকা তিনি নেন না। তা সত্ত্বেও তাঁকে নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য মমতার। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সাত বারের সাংসদ ছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী রয়েছি। আমি পেনশন এবং বেতন বাবদ ৩ লক্ষ টাকা পেতে পারি মাসে। ১৩ বছরে কয়েক কোটি টাকা দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু আমি টাকা নিইনি। আমার নিজের সাদা টাকা নিইনি।’’
এর পরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা আবারও বলেন, ‘‘আমার নামে সিবিআই মামলা করেছিল। বদমাইশের গাছগুলো। যে দিন ওদের গাছে বেঁধে ভাল করে আদর করতে পারব, সে দিন বুঝবে মিথ্যা বলার কী দাম।’’
একই সঙ্গে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে কুড়ি হাজার কোটি টাকা চুরির অভিযোগ তোলার জন্য শ্রীরামপুর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে ‘লুটেরা’ পার্টি বলেও কটাক্ষ করেছেন। নিশানা করেছেন ‘পিএম কেয়ার ফান্ড’-কেও। তাঁর কথায়, ‘‘কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলছে কুড়ি হাজার কোটি চুরি করেছে। চুরি করতে গেলে তোদের কাছে করতে যাব কেন? লুটেরা পার্টি একখানা। লজ্জা করে না। পিএম কেয়ার ফান্ডে কত কোটি ঝেড়েছিস? কেউ যদি মনে করে সরকার থেকে বিশ হাজার কোটি তুলব, সেটা কোনও ব্যাপার? আমরা ওই রাজনীতি করি না।’’
উল্লেখ্য, শ্রীরামপুরের আগে বনগাঁয় তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের হয়ে প্রচার সারেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ‘মোদীর গ্যারান্টি’ নিয়ে দুই কেন্দ্র থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন তিনি।