অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র
‘‘এই অনুব্রত মণ্ডল, কুণাল ঘোষ, তাপস পাল— কেউ কুলপতি হয়েছেন, কেউ চাকরির বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন, কেউ গরু পাচার মামলায়, কেউ কয়লা পাচার মামলায় জেলে গিয়েছেন। আমাকে বলুন, আপনারা কেউ জীবনে একসঙ্গে ৫০ কোটি টাকা দেখেছেন? এদের এক মন্ত্রীর কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা বেরোয়। আমি মমতাদিদিকে বলছি, এই ৫০ কোটি টাকা কার? ওই মন্ত্রীকে জেলে ঢোকানো উচিত নয় কি? মমতাদিদি, এই তো শুরু।’’
‘‘পুরো বাংলায় দারিদ্র। মোদীজির নেতৃত্বে পুরো ভারত এগিয়ে গিয়েছে। এত জল থাকা সত্ত্বেও বাংলা পিছনে পড়ে গিয়েছে। মোদীজি দেশকে সুরক্ষিত করেছেন। আর মমতাদিদি বাংলায় শুধু অনুপ্রবেশকারী, কাটমানি, দুর্নীতির কাজ করেছেন।’’
‘‘শান্তনু ঠাকুরকে জেতাবেন তো? মোদীজিকে তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী করবেন? বাংলার ৩০ আসন দেবেন? দেশে ৪০০ আসন পার করাবেন? তাহলে দু’হাত তুলুন। জোরে বলুন, ‘বন্দে মাতরম।’’’
‘‘মমতাদিদি যদি বাংলার জন্য কিছু করে থাকেন, সেটা হল অনুপ্রবেশকারী এবং দুর্নীতিকারীদের মদত। এখন মমতাদিদি ইভিএম গড়বড়ের অভিযোগ করছেন। মমতাদিদি, আপনি যখন জিতেছিলেন, তখন এই ইভিএম-ই ছিল।’’
অনুব্রত মণ্ডলের নাম নিয়ে কটাক্ষ করলেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের জেলে ভরা উচিত কি না? মমতাদিদি বলছেন, কেন জেলে ভরলেন। আমি বলি, মমতাদিদি এই তো শুরু। নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা দুর্নীতি, গরু পাচার দুর্নীতিতে জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না। সবাইকে জেলে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে হবে।’’
‘‘এখানে সিন্ডিকেটের রাজ, ভাইপোর গুন্ডামির রাজ। বন্ধ করা দরকার আছে না নেই? মমতাদিদি কি এগুলো রোধ করতে পারবেন? কেবল মোদীজি পারবেন। পদ্ম পারবে।’’
অমিত শাহ বললেন, দেশের কোনও শক্তি নেই যে সিএএ আটকাবে। নাম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন। কটাক্ষ করেন কংগ্রেসকে। পাশাপাশি, রামমন্দির তৈরি নিয়ে শাহ বলেন, ‘‘নিমন্ত্রণ করা সত্ত্বেও রামমন্দির উদ্বোধনে যাননি রাহুল গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, তাঁদের ভোটব্যাঙ্কের কারণে। তাঁদের ভোটব্যাঙ্ক অনুপ্রবেশকারীরা। আপনারা নন।’’ শাহের দাবি, রামমন্দির তৈরিতে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল, কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টরা। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই রামমন্দির তৈরি করেছেন মোদী।
সিএএ নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই অভিযোগ করলেন অমিত শাহ। বললেন, ‘‘মমতাদিদি আপনার সময় সমাপ্ত হয়ে এসেছে।’’ তিনি জানান, মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেনই। কেউ আটকাতে পারবেন না।
এ পর্যন্ত ৩৮০টি লোকসভা আসনে ভোট হয়েছে। অমিত শাহের দাবি, ইতিমধ্যে ২৭০ আসনে জয়ী মোদী। বাংলা থেকে ৩০টি আসনে জয়ী করার কথাও বলেন।
সভার শুরুতেই বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরকে জয়ী করার আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানালেন, বেনারস থেকে তাঁর আসতে দেরি হয়েছে।
পঞ্চম দফার ভোটের প্রচারে মঙ্গলবার রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একই দিনে দু’টি জনসভা করার কথা তাঁর। শাহের প্রথম সভাটি হচ্ছে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে, বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সমর্থনে। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুরকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন শান্তনু। এ বারও ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনুকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিজেপি। সে অর্থে আসন বাঁচানোর লড়াইয়ে নামছে বিজেপি। আর আসন পুনর্দখলের লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। তারা প্রার্থী করেছে বিশ্বজিৎ দাসকে।