Mamata Banerjee on Debasish Dhar

শীতলখুচিতে মানুষ মেরে হাতের রক্ত মোছেননি, তিনি প্রার্থী বীরভূমে! ‘পদ্মপুলিশ’ প্রার্থীকে তোপ মমতার

দেবাশিস ইস্তফা দেওয়া ইস্তকই জানা গিয়েছিল, তিনি পদ্মশিবিরে যুক্ত হচ্ছেন। তার পরে এ-ও স্পষ্ট হয়েছিল যে, তিনি ভোটে প্রার্থী হবেন। দিন কয়েক আগেই তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫৯
Share:

(বাঁ দিকে) দেবাশিস ধর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

কোচবিহারের সভা থেকে গত বিধানসভা ভোটের সময়কার শীতলখুচির প্রসঙ্গ টানলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রে বিঁধলেন সদ্য পদত্যাগী পুলিশকর্তা তথা লোকসভা ভোটে বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরকে। কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার সমর্থনে সভা থেকে বৃহস্পতিবার মমতা এ-ও অভিযোগ করেছেন, ওই পুলিশকর্তার বিষয়ে বিভাগীয় শাস্তি ছিল, ভিজিল্যান্স ছিল, রাজ্য সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর ভিজিল্যান্সে ‘ক্লিয়ারেন্স’ দিয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মমতা বলেছেন, ‘‘শীতলখুচিতে নির্বাচনের সময়ে লাইনে দাঁড়ানো পাঁচ জনকে গুলি করে মেরেছিল। ভোট চলাকালীন ছুটে এসেছিলাম। যে লোকটির নির্দেশে হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের দু’টি ডিপি চলছে। ভিজিল্যান্স ক্লিয়ার হয়নি। কিন্তু ভারতবর্ষের সরকার তাঁকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দিয়েছে! কোনও আইনকানুন কিছু মানে না।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘শীতলখুচিতে গুলি চালিয়ে এত মানুষ মেরেও হাতের রক্ত মোছেননি। তিনি আবার বীরভূমে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। আবার বলছেন, এসডিপিও ছিলেন। সো হোয়াট?’’

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় দেবাশিস অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘‘উনি যথেষ্ট সিনিয়র মানুষ। তথ্য না জেনে কথা বলেছেন। সঠিক সময়ে তথ্য-সহ আমি এর জবাব দিয়ে দেব। মানুষের সামনে ভুল তথ্য দেওয়া ঠিক নয়।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, দেবাশিস ইস্তফা দেওয়া ইস্তকই জানা গিয়েছিল, তিনি পদ্মশিবিরে যুক্ত হচ্ছেন। তার পরে এ-ও স্পষ্ট হয়েছিল, তিনি ভোটে প্রার্থী হবেন। দিন কয়েক আগেই তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে পদ্মশিবির। তৃণমূলের তিন বারের সাংসদ শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছেন দেবাশিস।

নিশানায় নিশীথ

নাম না করে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককেও নিশানা করেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘আরও এক জন বাবু আছে। আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের দলে ছিল আপদ। আর এখন বিজেপিতে গিয়ে হয়েছে সম্পদ। তোমার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আছে বলে দেব? সমস্ত কেস বলে দেব?’’ উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে কোচবিহারের যুব তৃণমূল নেতা ছিলেন নিশীথ। ‘মাদার’ (মূল) সংগঠনের বিরুদ্ধে যুবদের প্রার্থী দেওয়া নিয়ে সেই সময়ে কোচবিহার রোজই সংবাদ শিরোনামে থাকত। সংঘাতে প্রকাশ্যে এসেছিল কার্বাইনের মতো অস্ত্রও। তার পরে আস্তে আস্তে নিশীথ ক্রমশ তৃণমূলে কোণঠাসা হতে থাকেন। বিবিধ মামলাও রুজু হয়েছিল তাঁর নামে। ২০১৯-এর লোকসভার আগে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। পেয়ে যান টিকিটও।

প্রতিপক্ষ কারা?

মমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় তাঁর দলের লড়াই শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে নয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা লড়ছি সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি আরও অন্যান্য ছোট ছোট পার্টি, ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, এনআইএ-এর বিরুদ্ধে।’’ তৃণমূলনেত্রী এ-ও স্পষ্ট করে দেন, বাংলায় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ নেই। ওটা সর্বভারতীয় স্তরের বিষয়। তাঁর কথায়, ‘‘ইন্ডিয়া নামটাও আমার দেওয়া। সবটা আমি করে দিয়েছিলাম।’’

থানায় যান

বিজেপি ভয় দেখালেই থানায় ডায়েরি করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও থানা যদি অভিযোগ না নেয়, তবে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি দেখব।’’

নিশানায় নওশাদ

আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে নাম না করে নিশানা করলেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওই একটা মুসলিমদের পার্টি হয়েছে। ওরা ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিতে চায়। হায়দরাবাদের দলটা যেমন করে।’’ অর্থাৎ, মমতা নাম না-করে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘মিম’-এর ভূমিকার সঙ্গে নওশাদের দলের তুলনা করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement