— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দিল্লি-সহ উত্তর ভারতে ধোঁয়াশার দাপট এখনও কমেনি। তা সত্ত্বেও ফের এক বার রাজধানীতে ‘জিআরএপি ৩’ (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৩) বিধিনিষেধ শিথিল করল কেন্দ্র! গত কয়েক সপ্তাহে দূষণ সামান্য হলেও কমেছে, এমনটাই যুক্তি কেন্দ্রের।
গত কয়েক মাসে একাধিক বার ‘জিআরএপি’-র নিয়মবিধি পরিবর্তন করা হয়েছে। কখনও নিষেধাজ্ঞা কড়া হয়েছে, কখনও আবার কখনও শিথিল হয়েছে বিধিনিষেধ। কখনওই এক টানা বেশি দিন নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকেনি। বার বার জিআরএপি ১, ২, ৩ এবং ৪ জারি এবং প্রত্যাহার করায় বরং বিভ্রান্তি বেড়েছে রাজধানীর বাসিন্দাদের। সেই ‘রীতি’ মেনেই ফের এক বার ‘জিআরএপি ৩’ প্রত্যাহার করল কেন্দ্র।
কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (সিএকিউএম) জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকেই ওই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী, কোনও এলাকার বাতাসের গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ৩৫০ পেরিয়ে গেলে তৃতীয় পর্যায়ের বিধিনিষেধ (জিআরএপি ৩) জারি করা হয়। আর একিউআই ৪০০-র গণ্ডি পেরিয়ে গেলে জারি হয় চতুর্থ পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা (জিআরএপি ৪)। তাই ‘জিআরএপি ৩’ শিথিল হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন অনেকে। কেন্দ্রের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়েছে, রাজধানীর বাতাসের গুণগতমান বা একিউআই কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে ‘ভয়ানক’ পর্যায় থেকে প্রথমে ‘খুব খারাপ’ এবং ক্রমে ‘খারাপ’ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে বাতাসের গুণমান। তাই দূষণের মাত্রা কমতেই দিল্লি এবং সংলগ্ন এনসিআর এলাকায় বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে।
যদিও বাস্তব চিত্রটি আদতে সে রকম নয়! বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে বাতাসের গুণমানের খানিক পরিবর্তন হলেও দূষণ আদৌ কমেনি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত একিউআই ২৬৫ রেকর্ড করা হয়েছে। সিপিসিবি তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণগত মানের সূচক যদি শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে তা হলে তা ‘ভাল’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ৫১-১০০ ‘সন্তোষজনক’, ১০১-২০০ ‘সামান্য খারাপ’, ২০১-৩০০ ‘খারাপ’, ৩০১-৪০০ ‘খুব খারাপ’, ৪০১-৫০০ এবং ‘অতি ভয়ানক’। অর্থাৎ এখনও দিল্লির একিউআই ‘খারাপ’-র পর্যায়েই। ফলে রাজধানীর বাতাসের গুণমান নিয়ে এখনই কমছে না উদ্বেগ।
কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘জিআরএপি ৩’ বাতিল হলেও ‘জিআরএপি ১ ও ২’ শিথিল হচ্ছে না। তবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে ‘হাইব্রি়ড মডেলে’ পঠনপাঠনের পরিবর্তে রোজ স্কুলে এসে পঠনপাঠন শুরু করা যাবে। দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে যান চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ শিথিল হচ্ছে। দিল্লির রাস্তায় ফের চলাচল করতে পারবে বিএস ৩-এর নীচে থাকা পেট্রল গাড়ি এবং বিএস ৪-এর নীচে থাকা ডিজ়েল গাড়ি। চালানো যাবে পণ্যবাহী মাঝারি আকারের যানও। অনুমতি সাপেক্ষে যে কোনও ধরনের নির্মাণকাজ কিংবা ভাঙার কাজ ফের শুরু করা যাবে বলেও জানানো হয়েছে।