রায়বরেলীতে রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
শুক্রবার সকালে রায়বরেলীতে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। দুপুরে চার্টার্ড বিমানে মা সনিয়া গান্ধী, বোন প্রিয়ঙ্কা, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং গান্ধী পরিবারের জামাই রবার্ট বঢরার সঙ্গে দিল্লি থেকে উড়ে গিয়ে মনোনয়ন পেশ করলেও অমেঠী ছেড়ে পাশের কেন্দ্রে পাড়ি জমানো নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি রাহুল গান্ধী। শনিবার প্রথম বার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তিনি।
রায়বরেলীকে তাঁর ‘পরিবারের কর্মভূমি’ বলে বর্ণনা করে এক্স হ্যান্ডলে একটি হিন্দি পোস্টে রাহুল লিখেছেন, ‘‘রায়বরেলী থেকে মনোনয়ন আমার জন্য একটি আবেগময় মুহূর্ত ছিল! আমার মা আস্থা রেখে পরিবারের কাজের দায়িত্ব আমার হাতে তুলে দিয়েছেন এবং আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।’’
এর পরেই রাহুলের সাফাই, ‘‘অমেঠী এবং রায়বরেলী আমার কাছে আলাদা নয়। দু’টিই আমার পরিবার এবং আমি খুশি যে কিশোরীলালজি (অমেঠীর কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরীলাল শর্মা), যিনি গত ৪০ বছর ধরে ওই লোকসভা কেন্দ্রের সেবা করছেন, অমেঠী থেকে দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন।’’
অমেঠী এবং রায়বরেলী— উত্তরপ্রদেশের এই দু’টি লোকসভা কেন্দ্রেই আগামী ২০ মে ভোটগ্রহণ। ৩ মে মনোনয়ন ছিল জমা দেওয়ার শেষ দিন। ভোটের দু’সপ্তাহ আগে রায়বরেলী এবং অমেঠীর ভোটারদের উদ্দেশে রাহুলের আবেদন— ‘‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধে প্রিয়জনেদের ভালবাসা এবং আশীর্বাদ কামনা করছি। আমার বিশ্বাস, সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষার এই লড়াইয়ে আপনারা সকলে আমার পাশে থাকবেন।’’
২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বার লোকসভা নির্বাচনে অমেঠী কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন রাহুল। তবে ২০১৯ সালে ওই কেন্দ্রে বিজেপির স্মৃতির কাছে ৫৫ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি। রাহুলের অন্য আসন, কেরলের ওয়েনাড়ের ইতিমধ্যেই ভোট হয়ে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কেন্দ্রবদল নিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে নিশানা করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, রাহুল অমেঠীতে লড়লে ২০১৯ সালের মতোই স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজয় অনিবার্য ছিল। সেটা বুঝতে পেরেই উত্তরপ্রদেশে গান্ধী পরিবারের একমাত্র ‘অবশিষ্ট দুর্গ’ রায়বরেলীতে ‘আশ্রয়’ নিয়েছেন তিনি।
রাহুলের নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গাপুরের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির ‘পলায়নী মানসিকতা’ নিয়ে কটাক্ষ করেন। দাবি করেন, তিনি আগেই বলেছিলেন হারের ভয়ে নতুন আসন খুঁজছেন রাহুল। রাহুলের নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গাপুরের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির ‘পলায়নী মানসিকতা’ নিয়ে কটাক্ষ করেন। দাবি করেন, তিনি আগেই বলেছিলেন হারের ভয়ে নতুন আসন খুঁজছেন রাহুল।
অন্য দিকে স্মৃতি বলেন, ‘‘ভোটের আগেই অমেঠীতে হার মেনে নিয়েছে কংগ্রেস।’’ বিজেপির কটাক্ষের জবাবে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘রায়বরেলীতে রাহুলের প্রার্থী হওয়া উত্তারধিকার নয়, দায়িত্ব এবং কর্তব্যের প্রশ্ন।’’ সেই সঙ্গে বিজেপির উদ্দেশে তাঁর খোঁচা, ‘‘রাহুল উত্তরপ্রদেশ থেকে তিন বার এবং কেরল থেকে এক বার সাংসদ হয়েছেন। মোদীজি কেন বিন্ধ্যের দক্ষিণ থেকে ভোটে লড়ার সাহস পান না?’’