গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
১৯৯১ সালের লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে এলটিটিই-র মানববোমায় রাজীব গান্ধী খুন হওয়ার পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর সতীশ শর্মাকে অমেঠীর প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছিল কংগ্রেস। তিন দশকেরও বেশি সময় পরে বিজেপির হাতে থেকে গান্ধী পরিবারের পুরনো ‘দুর্গ’ পুনরুদ্ধারের ভার পেলেন আরও এক শর্মা— একদা রাজীবেরই আস্থাভাজন কংগ্রেস নেতা কিশোরীলাল।
আদতে পঞ্জাবের বাসিন্দা কিশোরীলালকে অমেঠীতে এনেছিলেন প্রয়াত রাজীবই। ১৯৮৩ সালে। তখন তিনি ওই কেন্দ্রের সাংসদ। অবশ্য অমেঠীর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সংশ্রব আরও কয়েক বছরের পুরনো। ১৯৭৭ সালে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজীবের ভাই সঞ্জয়। কিন্তু দেশ জুড়ে প্রবল ইন্দিরা গান্ধী বিরোধী হাওয়ার মুখে জয়ী হতে পারেননি। তবে তার তিন বছরের মধ্যেই ১৯৮০-র লোকসভা ভোটে অমেঠীর সাংসদ হয়েছিলেন সঞ্জয়। বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর অকালমৃত্যুর পরে ১৯৮১-র উপনির্বাচনে জেতেন রাজীব।
রাজীবের জমানাতেই অমেঠীর পাশাপাশি রায়বরেলী এবং সুলতানপুরের কংগ্রেস সংগঠন দেখভাল করতেন কিশোরীলাল। ১৯৯১-এ রাজীবের মৃত্যুর পরে তাঁর বন্ধু সতীশকে জেতাতেও বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। এর পরে ১৯৯৬-এর ভোটে অমঠী থেকে সতীশ জিতলেও ১৯৯৮ সালে হেরে গিয়েছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার এক বছর পরে, ১৯৯৯-এর লোকসভা ভোটে অমেঠী থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন সনিয়া। সনিয়ার ‘ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট’-এর দায়িত্ব ছিল কিশোরীলালের উপর।
গত দু’দশরেরও বেশি সময় ধরে অমেঠী এবং রায়বরেলীর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের ‘যোগসূত্র’ ছিলেন তিনি। এ বার অমেঠীর কঠিন লড়াই তাঁকেই লড়তে হবে সামনে থেকে। ভোটের পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ সালে অমেঠীতে জয়ী বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির সঙ্গে পরাজিত রাহুল গান্ধীর ব্যবধান ছিল ৫৫ হাজারেরও বেশি। প্রায় এক মাস আগে ফের অমেঠীর প্রার্থী হিসাবে স্মৃতির নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। তার পর থেকেই সেখানে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য। ব্যবধান কি মুছতে পারবেন কিশোরীলাল? হাতে সময় কিন্তু মোটে ১৭ দিন!