গুরমিত রাম রহিম সিংহ। — ফাইল চিত্র।
খুন এবং ধর্ষণের অপরাধে জেল খাটছেন গুরমীত রাম রহিম সিংহ। কিন্তু পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ভোটের বাজারে তাঁর সংগঠন ডেরা সাচ্চা সৌদার ‘দর’ কমেনি এতটুকুও। বরং দলনির্বিশেষে প্রার্থীদের ভিড় জমছে ডেরার সিরসার সদর দফতরে। রাম রহিমের উত্তরসূরি গুরিন্দর সিংহ ধীলোঁর ‘দরবারে’।
কংগ্রেসের চরণজিৎ সিংহ চন্নী (জালন্ধর), মণীশ তিওয়ারি (চণ্ডীগড়), বিজেপির রভনীত সিংহ বিট্টু (লুধিয়ানা), হংসরাজ হংস (ফরিদকোট), আম আদমি পার্টি (আপ)-র লালজিৎ সিংহ ভুল্লার (খাদুর সাহিব), শিরোমণি অকালি দলের বিরসা সিংহ ভালতোহার (খাদুর সাহিব) মতো প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই গুরিন্দরের আশীর্বাদ নিয়ে গিয়েছেন বলে প্রকাশিত একটি খবরে দাবি। বিপাশা নদীর তিরের ওই নাকি ‘আশ্রমে’ পা পড়েছে হরিয়ানারও বেশ কয়েক জন প্রার্থীর।
স্বাধীনতার পরে বালুচিস্তান থেকে এ দেশে এসে শাহ মস্তানা নামে এক ধর্মীয় গুরু ডেরা স্থাপন করেছিলেন। যিনি তাঁর শিষ্যদের কাছে তিনি ‘মস্তানা জি মহারাজ’ নামেও পরিচিত ছিলেন। রাম রহিম ছিলেন ডেরার শীর্ষপদে তাঁরই উত্তরসূরি। ডেরার ম্যানেজার রঞ্জিত সিংহকে খুন ও সিরসার আশ্রমে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে রাম রহিমকে ২০২২ সালে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছর কারাবাসের সাজা দেয় আদালত।
তার পর থেকে জেলে থাকলেও বিজেপি শাসিত হরিয়ানার সরকার পঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ডেরাপ্রধানও নাকি ‘পদ্ম’ প্রতীকে ছাপ দেওয়ার জন্য গোপন বার্তা পাঠিয়েছিলেন তাঁর ভক্তদের। ২০১৪ সালে হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি প্রার্থীদের নিয়ে সিরসার সদর দফতরে রাম রহিমের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ!
এমনিতে ডেরার সামাজিক কর্মসূচির তালিকা লম্বা। পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল-সহ উত্তর ও পশ্চিম ভারতে ডেরার প্রায় এক কোটি অনুগামী রয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির। তাই ডেরা কোনও দলকে সমর্থন করলে তার প্রভাব ইভিএমে পড়তে বাধ্য। ভোটবাজারে তাই সব দলেরই প্রার্থীদের ভিড় বাড়ছে ডেরার দফতর ‘রাধা স্বামী সৎসঙ্গে’। রাম রহিম এবং তাঁর ‘মানসকন্যা’ হনিপ্রীতের অনুপস্থিতিতে ‘কাজ’ সামলাচ্ছেন গুরিন্দর।