তাপস রায়। —ফাইল চিত্র।
২৫ বৈশাখের ভরা দুপুর। রবি ঠাকুরের জন্মদিনে তাঁর জোড়াসাঁকোর বাড়িতে শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের অফিসে ফিরে এলেন। আবারও প্রচারে বেরিয়ে গেলেন তাপস রায়। তিনি এ বার উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী। দুপুরে তাঁর অফিসে বসে উত্তর কলকাতার ভোটের সমীকরণ নিয়ে নানা আলোচনা চলছিল বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। জেলা থেকে মণ্ডল সকলের জন্যই অবারিত দ্বার তাপসের অফিস। ভোটের কৌশলের আলোচনার সুবাদেই উঠে এল প্রধান প্রতিপক্ষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর বিধায়ক স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। এর পর স্বাভাবিক নিয়মেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নাম নিয়ে আলোচনার আসর সরগরম।
শাসকদলের এত জন শীর্ষ নেতার নামে আলোচনায় প্রশংসার লেশটুকু ধরা পড়েনি। তবে সুদীপ ও নয়নার উত্তর কলকাতার মানুষের প্রতি ব্যবহার নিয়েই সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ ধরা পড়েছে বিজেপি নেতাদের কথায়। মমতা, অভিষেকের মতো নেতারাই এ সব ঘটনার জন্য দায়ী বলেও দাবি করেন অনেকে। অথচ তৃণমূলের একজন নেতার নাম উঠতেই বিজেপির বেশির ভাগ নেতাই প্রশংসা করলেন একবাক্যে। তিনি কুণাল ঘোষ। এক সময়ের দাপুটে সাংবাদিক কুণালের এখন পরিচয় তিনি তৃণমূলের নেতা। সম্প্রতি তাঁকে সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তা নিয়েও তাপসের অফিসের বিজেপির নেতা-কর্মীদের মনে রয়েছে কুণালের সমবেদনা। এক নেতার কথায়, ‘‘কুণাল যদি শুধু সাংবাদিকতা করত। তা হলে বাংলার সাংবাদিকতাকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেত। কিন্তু রাজনীতিতে আসায় ওর মতো সাংবাদিক নিজের প্রতিভার সঠিক ব্যবহার করতে পারেনি।’’
তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বিজেপির সবচেয়ে বড় সমালোচক কুণাল। তবে আক্রমণের সময় যে তাঁর ভাষার তালজ্ঞান থাকে না, সেই অনুযোগও করলেন আর এক নেতা। তবে একদা কারাবন্দি কুণাল যে ভাবে তাঁর খারাপ সময়ের সঙ্গে লড়াই করে ফিরে এসেছেন, তা-ও স্মরণ করলেন অনেকেই। এক জেলা বিজেপির নেতার কথায়, ‘‘কুণাল নিজের উপর হওয়া কোনও অত্যাচার ভোলেনি। ঠিক সময়ে সবকিছুর জবাব দেবে বলেই আমরা বিশ্বাস।’’