Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Baithakkhana Bazar

এই বাজারের নাম ‘বৈঠকখানা’ হল কী করে জানেন?

১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি নদীর তীরে জঙ্গলে ঢাকা এলাকায় এসে ভিড়েছিল জোব চার্নকের ডিঙি। যদিও, কলকাতার গবেষকদের মত, তাঁর প্রথম পছন্দ ‘কলকাতা’ ছিল না।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:২৩
Share: Save:
০১ ১০
বাজার ঢুকে পড়েছে বসার ঘরে, নাকি বসার ঘরই এসে হাজির বাজারে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খায় এই বাজারের নামে। কলকাতার বিখ্যাত সেই বৈঠকখানা বাজারের জন্মবৃত্তান্তের শিকড় কিন্তু কয়েকশো বছরের পুরনো।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

বাজার ঢুকে পড়েছে বসার ঘরে, নাকি বসার ঘরই এসে হাজির বাজারে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খায় এই বাজারের নামে। কলকাতার বিখ্যাত সেই বৈঠকখানা বাজারের জন্মবৃত্তান্তের শিকড় কিন্তু কয়েকশো বছরের পুরনো।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

০২ ১০
কলকাতার ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দের মানচিত্রে লালবাজার মোড় থেকে পূর্ব দিকে শিয়ালদহ পর্যন্ত রাস্তা-ই ছিল বৈঠকখানা রোড। কিন্তু ‘বৈঠকখানা’ নাম কোথা থেকে এল? তার জন্য পিছিয়ে যেতে হবে সপ্তদশ শতকে।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

কলকাতার ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দের মানচিত্রে লালবাজার মোড় থেকে পূর্ব দিকে শিয়ালদহ পর্যন্ত রাস্তা-ই ছিল বৈঠকখানা রোড। কিন্তু ‘বৈঠকখানা’ নাম কোথা থেকে এল? তার জন্য পিছিয়ে যেতে হবে সপ্তদশ শতকে।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

০৩ ১০
১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি নদীর তীরে জঙ্গলে ঢাকা এলাকায় এসে ভিড়েছিল জোব চার্নকের ডিঙি। যদিও, কলকাতার গবেষকদের মত, তাঁর প্রথম পছন্দ ‘কলকাতা’ ছিল না।  (ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি নদীর তীরে জঙ্গলে ঢাকা এলাকায় এসে ভিড়েছিল জোব চার্নকের ডিঙি। যদিও, কলকাতার গবেষকদের মত, তাঁর প্রথম পছন্দ ‘কলকাতা’ ছিল না। (ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

০৪ ১০
সে সময়ে গঙ্গার তীরবর্তী অন্যতম সমৃদ্ধ জনপদ ছিল শ্রীরামপুর। সেখানেই ঘাঁটি করতে চেয়েছিলেন জোব চার্নক। কিন্তু পারেননি অন্যান্য ইউরোপীয় বণিকগোষ্ঠী ও মুঘল সুবেদারদের দাপটে। বাধ্য হয়ে তিনি চলে আসেন আজকের কলকাতায়। কারণ জলে-জঙ্গলে ভরা এই জায়গা অন্য দেশের বণিকদের নেকনজরে ছিল না।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

সে সময়ে গঙ্গার তীরবর্তী অন্যতম সমৃদ্ধ জনপদ ছিল শ্রীরামপুর। সেখানেই ঘাঁটি করতে চেয়েছিলেন জোব চার্নক। কিন্তু পারেননি অন্যান্য ইউরোপীয় বণিকগোষ্ঠী ও মুঘল সুবেদারদের দাপটে। বাধ্য হয়ে তিনি চলে আসেন আজকের কলকাতায়। কারণ জলে-জঙ্গলে ভরা এই জায়গা অন্য দেশের বণিকদের নেকনজরে ছিল না।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

০৫ ১০
যাই হোক, চার্নক বুঝে গেলেন, ব্রিটিশদের কুঠি করতে হলে, তাঁকে হুগলির তীরে এই বনজঙ্গলে ভরা গ্রামেই থাকতে হবে। তিনি ব্যবসা জমানোর জন্য স্থানীয় ব্যাপারীদের সঙ্গে গল্প করতেন। পরনে ঢিলে পায়জামা আর কামিজ, গড়গড়া বা দেশি হুঁকোয় টান দিতে দিতে চার্নক সাহেব আড্ডা দিতেন সুতানুটি গ্রামের বিশাল এক বটগাছের নীচে। সেখানে বিশ্রাম নিতেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

যাই হোক, চার্নক বুঝে গেলেন, ব্রিটিশদের কুঠি করতে হলে, তাঁকে হুগলির তীরে এই বনজঙ্গলে ভরা গ্রামেই থাকতে হবে। তিনি ব্যবসা জমানোর জন্য স্থানীয় ব্যাপারীদের সঙ্গে গল্প করতেন। পরনে ঢিলে পায়জামা আর কামিজ, গড়গড়া বা দেশি হুঁকোয় টান দিতে দিতে চার্নক সাহেব আড্ডা দিতেন সুতানুটি গ্রামের বিশাল এক বটগাছের নীচে। সেখানে বিশ্রাম নিতেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

০৬ ১০
আজ যেখানে বউবাজার স্ট্রিট এসে মিশেছে লোয়ার সার্কুলার রোডে, সেখানেই ছিল এই বিশাল বটগাছ। গ্রীষ্মের দুপুরে তার নীচেই জমত আড্ডা আর বিকিকিনি। ক্রমে জায়গাটার নামই মুখে মুখে হয়ে গেল ‘বৈঠকখানা’ এবং বাজারের নাম বৈঠকখানা বাজার। জোব চার্নকের ব্যবসায়িক সাফল্যের পিছনে অবদান ছিল ওই বটগাছের।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

আজ যেখানে বউবাজার স্ট্রিট এসে মিশেছে লোয়ার সার্কুলার রোডে, সেখানেই ছিল এই বিশাল বটগাছ। গ্রীষ্মের দুপুরে তার নীচেই জমত আড্ডা আর বিকিকিনি। ক্রমে জায়গাটার নামই মুখে মুখে হয়ে গেল ‘বৈঠকখানা’ এবং বাজারের নাম বৈঠকখানা বাজার। জোব চার্নকের ব্যবসায়িক সাফল্যের পিছনে অবদান ছিল ওই বটগাছের।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

০৭ ১০
পণ্যের দরদামের পাশাপাশি বাজারের সার্বিক হাওয়াও বুঝে নিতেন জোব চার্নক। শুধু আড্ডাই নয়। কয়েক বছরের মধ্যে যখন চার্নকসাহেব-ই সুতানটি-কলকাতা-গোবিন্দপুরের অভিভাবক, তখন ওই গাছের ছায়ায় বসত তাঁর কাউন্সিল বা বিচারসভা।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

পণ্যের দরদামের পাশাপাশি বাজারের সার্বিক হাওয়াও বুঝে নিতেন জোব চার্নক। শুধু আড্ডাই নয়। কয়েক বছরের মধ্যে যখন চার্নকসাহেব-ই সুতানটি-কলকাতা-গোবিন্দপুরের অভিভাবক, তখন ওই গাছের ছায়ায় বসত তাঁর কাউন্সিল বা বিচারসভা।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

০৮ ১০
বউবাজার স্ট্রিট তৈরির সময় ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলির নির্দেশে ওই বটগাছ কাটা হয়। ওয়েলেসলির এই সিদ্ধান্ত ঘিরে যথেষ্ট বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে, তিনি দেশীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। আবার কোনও সূত্রের দাবি, ওই গাছ কাটা হয়েছিল ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের নির্দেশে।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

বউবাজার স্ট্রিট তৈরির সময় ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলির নির্দেশে ওই বটগাছ কাটা হয়। ওয়েলেসলির এই সিদ্ধান্ত ঘিরে যথেষ্ট বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে, তিনি দেশীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। আবার কোনও সূত্রের দাবি, ওই গাছ কাটা হয়েছিল ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের নির্দেশে।(ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

০৯ ১০
তবে এই গাছের পরিচয় নিয়েও বিতর্ক আছে। অনেক গবেষকের মত, বৈঠকখানার সঙ্গে সম্পর্কিত গাছ কোনও ভাবেই বটগাছ ছিল না। বরং, তা ছিল নিমগাছ। এবং সে গাছের অস্তিত্ব ছিল বেনিয়োটোলা আর শোভাবাজারের মাঝে গঙ্গার ধারে, নিমতলায়। সেই গাছের ছায়ায় জমে ওঠা আড্ডা থেকেই জন্ম ‘বৈঠকখানা’ নামের। জোব চার্নকের মৃত্যুর পরেও বহু দিন সে গাছের অস্তিত্ব ছিল। ১৭৭৯ খ্রিস্টাব্দে সেটি পুড়িয়ে ফেলা হয়। কেন, সেই কারণ জানা যায় না।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

তবে এই গাছের পরিচয় নিয়েও বিতর্ক আছে। অনেক গবেষকের মত, বৈঠকখানার সঙ্গে সম্পর্কিত গাছ কোনও ভাবেই বটগাছ ছিল না। বরং, তা ছিল নিমগাছ। এবং সে গাছের অস্তিত্ব ছিল বেনিয়োটোলা আর শোভাবাজারের মাঝে গঙ্গার ধারে, নিমতলায়। সেই গাছের ছায়ায় জমে ওঠা আড্ডা থেকেই জন্ম ‘বৈঠকখানা’ নামের। জোব চার্নকের মৃত্যুর পরেও বহু দিন সে গাছের অস্তিত্ব ছিল। ১৭৭৯ খ্রিস্টাব্দে সেটি পুড়িয়ে ফেলা হয়। কেন, সেই কারণ জানা যায় না।(ছবি: শুভেন্দু চাকী)

১০ ১০
গাছের অবস্থান বা পরিচয় যা-ই হোক না কেন, আড্ডার ঠেক বা মজলিশের দরবার গড়ে উঠেছিল তারই আশ্রয়ে। সেই গাছ আর আজ নেই। তার স্মৃতি নিয়ে রয়ে গিয়েছে ‘বৈঠকখানা বাজার’।
(ছবি: শুভেন্দু চাকী) (ঋণস্বীকার:  কলকাতা: শ্রীপান্থ, কলিকাতার রাজপথ সমাজে ও সংস্কৃতিতে: অজিতকুমার বসু, মিউনিসিপ্যাল ক্যালকাটা: ইটস ইনস্টিটিউট ইন দেয়ার অরিজিন অ্যান্ড গ্রোথ)

গাছের অবস্থান বা পরিচয় যা-ই হোক না কেন, আড্ডার ঠেক বা মজলিশের দরবার গড়ে উঠেছিল তারই আশ্রয়ে। সেই গাছ আর আজ নেই। তার স্মৃতি নিয়ে রয়ে গিয়েছে ‘বৈঠকখানা বাজার’। (ছবি: শুভেন্দু চাকী) (ঋণস্বীকার: কলকাতা: শ্রীপান্থ, কলিকাতার রাজপথ সমাজে ও সংস্কৃতিতে: অজিতকুমার বসু, মিউনিসিপ্যাল ক্যালকাটা: ইটস ইনস্টিটিউট ইন দেয়ার অরিজিন অ্যান্ড গ্রোথ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy