ফের বন্দুকবাজের হানা মার্কিন সেনা ছাউনিতে। ছ’মাসে এই নিয়ে তিন বার। বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ পায়ে হেঁটেই টেক্সাসের ফোর্ট হুড সেনা ঘাঁটিতে হানা দেয় এক মার্কিন সেনা। আর তার পর ঝড়ের বেগে গুলি চালাতে শুরু করে সে। ৩ জনকে মেরে এবং ১৬ জন সেনাকে জখম করার পর তাণ্ডব থামে এক মহিলা অফিসারের বন্দুকের সামনে। কিন্তু তার পরই নিজের মাথা লক্ষ করে সটান গুলি চালিয়ে দেয় সে।
গত কালের ঘটনায় ফোর্ট হুডে ফিরে এসেছিল ২০০৯ সালের আতঙ্ক। সে বছর এখানেই সেনাবাহিনীর এক মনোবিদ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছিল ১৩ জনকে। তার পর নিজেকে ‘শহিদ’ বলে ঘোষণা করেছিল। এ বার অবশ্য সন্ত্রাসের যোগসূত্র পাচ্ছে না মার্কিন প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, হতাশায় ভুগছিল আততায়ী। সন্দেহ, তার জেরেই এই কাণ্ড।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আততায়ী ইভান লোপেজ ২০১১ সালে চার মাস ইরাকে কাটিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই হতাশায় ভুগছিল সে। কর্মসূত্রে গত ফেব্রুয়ারিতেই ফোর্ট হুডে আসে। এ দিন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মার্ক মাইলি জানিয়েছেন, বুধবার বিকেল চারটের সময় লোপেজ পায়ে হেঁটে সেনা ছাউনিতে হানা দেয়। প্রথমে একটি বাড়িতে ঢুকে ঝড়ের বেগে গুলি চালাতে শুরু করে। তার পর একটা গাড়ি নিয়ে চলে আসে কাছেই সেনা ছাউনির অন্য একটি বাড়িতে। সেখানেও বেপরোয়া ভাবে গুলি চালাতে থাকে লোপেজ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন জনের। আহতদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা গুরুতর। টেক্সাসের হাসপাতালে আইসিইউ-এ ভর্তি রয়েছেন আরও ন’জন।
মার্ক জানালেন, গুলিযুদ্ধ শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পৌঁছে যায় অ্যাম্বুল্যান্সও। ফোর্ট হুডের মাথার উপর পাক খেতে শুরু করে পুলিশের হেলিকপ্টার। ঘিরে ফেলা হয় চত্বরটাকে। “তন্নতন্ন করে তখন খোঁজা হচ্ছে বন্দুকবাজকে। ইতিমধ্যে হঠাৎই এক মহিলা সেনা অফিসারের সামনে পড়ে যায় লোপেজ। দু’জনের মধ্যে তখন ২০ ফুটেরও কম দূরত্ব। দু’হাত তুলে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় তাকে। কথা মতো তাই করে লোপেজ। কিন্তু আচমকাই হাত ঢুকিয়ে দেয় জ্যাকেটের পকেটে। বেরিয়ে আসে একটা .৪৫ ক্যালিবার পিস্তল। আর তার পর ট্রিগার টিপে দেন নিজের মাথায়” বললেন জেনারেল মার্ক।
বন্দুকবাজ হানার খবর তত ক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশে। কাছেই টেক্সাস কলেজ। সব ক্লাস বাতিল করে দিয়ে ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে কলেজ চত্বর। গত ক’বছরে সেনা ছাউনি থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, শপিং কমপ্লেক্স, বহু জায়গাতে বহু বার এ হেন ঘটনার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমেরিকার। গত বছর সেপ্টেম্বরেই ওয়াশিংটনের নৌসেনা দফতরে বন্দুকবাজের হামলায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত মাসে নরফকের নৌ ঘাঁটিতে নিহত হন এক নাবিক। তাই এ বারের ঘটনাকে আর লঘু ভাবে নেয়নি প্রশাসন। তড়িঘড়ি খালি করে দেওয়া হয় এলাকা।
প্রতিরক্ষা সচিব চাক হেগেল আজ বললেন, “ভয়াবহ ঘটনা। ফোর্ট হুডের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, সমস্যাটা এখনও রয়ে গিয়েছে।” যদিও আমেরিকায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। মাঝে ওবামা প্রশাসন এ নিয়ে উঠে পড়ে লাগলেও, তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ দিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে ফের এ রকম একটা ঘটনা ঘটায় মন ভেঙে গেল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy