অনুপ্রবেশকারী বিতাড়ন নিয়ে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যকে নেহাতই ‘ভোটের রাজনীতি’ বলে মনে করছে বাংলাদেশ। সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলি এই বক্তব্যকে খুব একটা আমল দিতে রাজি নয়।
কিছু দিন আগে হুগলির শ্রীরামপুরের জনসভায় বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে মোদীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুপ্রবেশকারী-তোষণের জন্য বিঁধে মোদী বলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ভারতে অবৈধ ভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের তল্পিতল্পা গুছিয়ে ফিরে যেতে হবে। বিষয়টি বাংলাদেশেও চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায় ভোটের ময়দানে অনেক রাজনীতিকই অনেক কিছু বলেন। কূটনীতিতে সে সব বিষয় গুরুত্ব পায় না। ঢাকাও তাই নিশ্চিত, ভারতের যে পক্ষই সরকার গড়ুক, বাংলাদেশ সম্পর্কে বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি নিয়েই চলবে। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের ওই কর্তা বলেন, শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারের আমলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উঠেছে। নিরাপত্তা নিয়ে ঢাকার সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বার বার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ থেকে শুরু করে অন্য মন্ত্রীরা। তিনি বলেন, ভারতে যে সরকারই আসুক, ঢাকা তাদের সহযোগিতার হাত ফিরিয়ে নেবে না।
আওয়ামি লিগের কেন্দ্রীয় নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “ভারতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ বসবাসকারী আছেন বলে আমাদের জানা নেই। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের বৈধতার বিষয়টির তো ফয়সালা হয়ে গিয়েছে। জানি না মোদী ঠিক কাদের কথা বলেছেন।” আওয়ামি লিগের মুখপাত্র হাসান মাহমুদের কথায়, “ভারতে এখন ভোটের মরসুম চলছে। ভোটার টানতে কত জনে তো কত কথাই বলেন! তাঁরা যা বলছেন, তা ও-দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের কিছুই বলার নেই।” কিন্তু মোদীর এ ধরনের কথায় বাংলাদেশের শাসক দল কি উদ্বিগ্ন? এই প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ বলেন, “মোদী এখন রাজনীতিবিদ, সরকারের প্রতিনিধি নন। তাঁর কথা যেমন সরকারের কথা নয়, ভারতের মানুষের ভাষ্য বলেও আমরা তাকে মানি না। তাই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কোনও কারণ দেখছি না।” মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “মোদী সরকার গড়বেন কি-না আমি জানি না। তবে যিনিই গড়ুন, নতুন সরকারের বিদেশনীতি যে এটা হবে না, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত।”
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মুখপাত্র জিয়াউদ্দিন বাবলু মোদীর বক্তব্যের নিন্দা করলেও তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “মোদী যা বলেছেন, তা গণতন্ত্রের ভাষ্য নয়। যে সরকারই ভারতে আসুক, আশা করি ধর্মনিরপেক্ষতার ধারা সে দেশে বজায় থাকবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী যা বলছেন, সে দেশের মানুষই তার জবাব দেবেন। তাই আমাদের উদ্বেগের কারণ নেই।” আর এক বিরোধী দল বিএনপি-র মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভি মোদীর বক্তব্যকে ‘প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে উল্লেখ করে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy