চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
আফগানিস্তানে তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পরে তাদের দুই সমর্থক চিন ও পাকিস্তান প্রকাশ্যে কী বার্তা দেয়, সেই নিয়ে আগ্রহ ছিল আন্তর্জাতিক মহলে। আজ শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বৈঠকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের বক্তব্যেও উঠে এল আফগানিস্তান প্রসঙ্গ।
শি জানান, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের জেরে আফগানিস্তানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় তৈরি হয়েছে। কিন্তু সে দেশ বেশ কিছু সঙ্কটের মুখে পড়েছে। প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষত আঞ্চলিক দেশগুলির সাহায্য। আজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও গোটা বিশ্বকে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মনে রাখতে হবে আফগান সরকার বিদেশি সাহায্যের উপরে নির্ভরশীল।’’
এর পাশাপাশিই শি-এর মতো ইমরানও মনে করেন প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে হবে তালিবানকে। আফগানিস্তানের প্রশাসন ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্ত জাতি, সমস্ত স্তরের প্রতিনিধিত্ব যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেই সংস্কৃতি তৈরিতে এসসিও সদস্য দেশগুলিকেও পাশে দাঁড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে নম্রতা বজায় রাখার বার্তাও দেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানকে।
আফগানিস্তানের মাটি যাতে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর নয়, বরং সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য ব্যবহার করা হয় সেই বিষয়েও এক সুর উঠে এসেছে শি এবং ইমরানের বক্তব্যে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখে ইমরান যতই সন্ত্রাস মোকাবিলার বার্তা দিন, আফগান-ভূমে পালাবদলের পরে সেখানে একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীকে ভারতে নাশকতার কাজে ব্যবহার করতে সক্রিয় আইএসআই।
শুধু আফগানিস্তান নয়, সামগ্রিক ভাবে সন্ত্রাস বিরোধিতার বার্তা দিয়ে শি জানিয়েছেন, সন্ত্রাস, বিচ্ছিন্নতাবাদের ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের বিরুদ্ধে বিশেষ ভাবে সরব হয়েছেন তিনি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এসসিও দেশগুলিকে জোট বেঁধে সুস্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন করেছেন। এর পাশাপাশি মাদক বিরোধিতা, সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন। জানিয়েছেন, আফগানিস্তানকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে, যাতে সামগ্রিক শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়নের পরিবেশ তৈরি হয়।
অন্য দিকে ইমরান জানিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় আফগান সঙ্কটের ছোঁয়া লাগে পাকিস্তানেরও। তাই আফগানিস্তানে শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখতে উৎসুক পাকিস্তানও। এ বিষয়ে বিশ্বকে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
তবে শি আজ এসসিও সদস্য দেশগুলিকে বার্তা দিয়েছেন, নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখা এবং অন্যদের অনাবশ্যক খবরদারির আওতা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য, যে সমস্ত দেশ মনে করে অন্যদের উপরে খবরদারি করা যেতে পারে এবং যারা নিজেদের প্রভাবশালী হিসেবে প্রচার করতে থাকে, তাদের সরাসরি খারিজ করা উচিত। শি-এর বক্তব্য, দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবি যেন নিজের হাতেই থাকে। পরিস্থিতি যা-ই হোক, কোনও অবস্থাতেই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাহ্যিক হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা হয়তো কিছু সময়ের জন্য জয়লাভ করে কিন্তু ন্যায় বজায় থাকে দীর্ঘসময়।’’
ইরানকে এসসিও-র নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত করার প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে বলে আজ জানিয়েছেন শি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy