—ফাইল চিত্র
ধাপে ধাপে লকডাউন উঠতে শুরু করেছে দেশটায়। কড়াকড়ির রাশ কমেছে অনেকটাই। ঘরবন্দি জীবন থেকে বেরিয়ে অল্প অল্প করে ছন্দে ফিরছে ব্রিটেনের মানুষ। সপরিবার কেউ কাছে-পিঠে ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন, কেউ বা সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে ভিড় জমাচ্ছেন রেস্তরাঁ আর পাবে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, ২১ জুন থেকে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ উঠে যাবে। মিলবে মুক্তির হাওয়া।
কিন্তু তার আগেই নতুন বিপদের গন্ধ পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। অতিসংক্রামক ভারত ভ্যারিয়্যান্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টের দৌলতে ব্রিটেনে সংক্রমণের সংখ্যা ফের বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে এক দল বিশেষজ্ঞ নিয়ন্ত্রণবিধি আরও কিছু দিন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্য দিকে, তাতে অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ী মহল। তাদের মতে, এক বছর ধরে লোকসানে চলতে থাকা ব্যবসাগুলি ২১ জুন থেকে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে তৈরি। এই সময়ে সরকার সিদ্ধান্ত বদল করলে তা খারাপ প্রভাব ফেলবে। ফলে দোটানায় ভুগছে ব্রিটেন সরকার।
গতকাল এ বিষয়ে প্রশাসনকে সচেতন করে এক দল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল হাজারের মধ্যে। মাত্র সাত দিনে চিত্রটা বদলে গিয়েছে। সোমবার সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩৮৩ জন। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ২৮.৮ শতাংশ বেশি! ব্রিটেনে কার্যত তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। কেমব্রিজের অধ্যাপক এবং সরকারের ভাইরাস সংক্রান্ত মেডিক্যাল বোর্ডের উপদেষ্টা রবি গুপ্ত গতকাল এই প্রসঙ্গে নিয়ন্ত্রণবিধি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে হয়তো সংক্রমিতের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত ভাবে কম। কিন্তু সব ঢেউয়ের শুরুতে আক্রান্তের সংখ্যা এই রকম কম থাকে। তার পর হঠাৎ হু-হু করে বেড়ে যায়। নতুন ঢেউয়ের প্রাথমিক লক্ষণগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।’’ তাঁর মতে, এ বারে দেশের একটা বড় অংশকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলে সংক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালে ভর্তি বা মৃতের সংখ্যা তেমন বাড়েনি। হয়তো এ কারণেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে একটু দেরি হতে পারে। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনও স্থান নেই। টিকা নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত ভাবার ভুল যেন কেউ না করেন। ব্রিটেন সরকারকে তাঁর পরামর্শ, ২১ জুনের পরে আরও কয়েক সপ্তাহ নিয়ন্ত্রণবিধি জারি থাকুক। ‘জয়েন্ট কমিটি অব ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন’ (জেসিভিআই)-এর বিশেষজ্ঞ অ্যাডাম ফিনেরও একই মত। তিনি জানান, নিয়ন্ত্রণবিধি আরও কিছু দিন জারি রাখুক সরকার।
তবে এর বিরুদ্ধ মতও রয়েছে। জেসিভিআই-এর বেশ কয়েক জন বিজ্ঞানীর মতে, দেশে পঞ্চাশোর্ধদের মধ্যে অধিকাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। বাকিদের টিকাকরণও দ্রুতগতিতে হচ্ছে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর কাউন্সিল চেয়ারম্যান চাঁদ নাগপালের পরামর্শ, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণবিধি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে ব্রিটেন।
ফলে ২১ জুন সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় তার অপেক্ষায় রয়েছে মানুষ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ১৫ জুন নাগাদ সিদ্ধান্ত জানানো হবে। অন্য দিকে, চিনের জিয়াংশু প্রদেশের শেনজিয়াং শহরে এক ব্যক্তির দেহে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মানবদেহে এইচ১০এন৩ নামে এই স্ট্রেনের সংক্রমণ বিশ্বে প্রথম। ২৮ এপ্রিল জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই ব্যক্তি। তবে তিনি এখন সুস্থ বলেই জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy