Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Julian Assange

অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করা যাবে না, জানিয়ে দিল ব্রিটেনের আদালত

উইকি-কর্তার মানসিক স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে পারে এবং তিনি যে আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারেন, তেমন ঝুঁকিও রয়েছে। যদিও এই রায়ের বিরুদ্ধে দু’সপ্তাহের মধ্যে ফের আদালতে যাবে বলে নোটিস দিয়েছে আমেরিকা সরকার।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৫১
Share: Save:

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকায় প্রত্যপর্ণ করা যাবে না। সোমবার সাফ জানিয়ে দিল ব্রিটেনের এক আদালত। লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্টের বিচারপতি ভেনেসা ব্যারেটজারের মতে, আমেরিকার হাতে অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণ করা হলে সেখানকার ‘দমনমূলক’জেল ব্যবস্থায় পুরোপুরি আলাদা ভাবে রাখা তাঁকে হতে পারে। বিচারকের মতে, ওই পরিস্থিতিতে থাকলে উইকি-কর্তার মানসিক স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে পারে এবং তিনি যে আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারেন, তেমন ঝুঁকিও রয়েছে। যদিও এই রায়ের বিরুদ্ধে দু’সপ্তাহের মধ্যে ফের আদালতে যাবে বলে নোটিস দিয়েছে আমেরিকা সরকার।

সোমবার ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এই সিদ্ধান্তের পর দৃশ্যতই স্বস্তি পেয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। আদালত কক্ষে উপস্থিত অ্যাসাঞ্জের দীর্ঘদিনের বান্ধবী স্টেলা মরিস আনন্দে কেঁদে ফেলেন। পাশে বসা উইকিলিসের মুখ্য সম্পাদক ক্রিস্টিন র‌্যাফসনকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। আদালতের বাইরে সোমবার সকাল থেকেই জড়ো হয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জের সমর্থকেরা। তাঁরা স্লোগান তোলেন, ‘অ্যাসাঞ্জকে মুক্ত করুন!’

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আমেরিকায় ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে অ্যাসাঞ্জের। আমেরিকায় প্রত্যর্পণের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিটেনের আদালতে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন ৪৯ বছরের উইকি-কর্তা। ২০১০ সালে আফগানিস্তান এবং ইরাকে আমেরিকার সেনা অভিযান সংক্রান্ত ৫ লক্ষ গোপন ফাইল ফাঁস করে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০-’১১ সালে মার্কিন সরকারের কম্পিউটার হ্যাক করে ওই গোপন নথি প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ রয়েছে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি চার্জ রয়েছে। ওই মামলায় আমেরিকায় দোষী সাব্যস্ত হলে ১৭৫ বছরের কারাবাস হতে পারে অ্যাসাঞ্জের।

আরও পড়ুন: আমেরিকার মিত্র দেশের তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে পাকিস্তান

আরও পড়ুন: ৫০ লক্ষ কোভ্যাক্সিন কিনতে আগ্রহী ব্রাজিলের বেসরকারি ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশন


আমেরিকায় প্রত্যর্পণের জন্য ব্রিটেনের আদালতে মামলা করার পিছনে সেখানকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে দাবি অ্যাসাঞ্জের সমর্থক এবং আইনজীবীদের। তাঁদের দাবি, অ্যাসাঞ্জকে নিজের ‘রাজনৈতিক শত্রু’ হিসেবেই দেখেন ট্রাম্প। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। প্রত্যর্পণ মামলায় শুনানির সময় আমেরিকার সরকারের দাবি ছিল, অ্যাসাঞ্জের যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, তার খেয়াল রাখা হবে। তবে বিচারক যে দাবি খারিজ করে উল্লেখ করেন, আমেরিকার জেলে কড়া নিরাপত্তা সত্ত্বেও ফাইন্সার জেফ্রি এপস্টাইন-সহ বহু বন্দি আত্মহত্যা করতে সক্ষম হয়েছেন। তা ছাড়া, অ্যাসাঞ্জের অবসাদ, অটিজম এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও রয়েছে। এই অবস্থায় তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য বিগড়ে যেতে পারে বলে মনে করে বিচারক। তিনি বলেন, “এই কারণেই প্রত্যর্পণ তাঁর (অ্যাসাঞ্জের) পক্ষে মানসিক ভাবে নিপীড়নমূলক হবে।”

অ্যাসাঞ্জের পক্ষে এর আগেই সরব হয়েছে জার্মানি এবং রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাঁর হয়ে মুখ খুলেছে আমেরিকায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে লড়াই করা সংগঠনগুলিও। ২০১০-এ একটি যৌন নির্যাতনের মামলায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সুইডেন। সে সময় লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১২ থেকে ’১৯ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি। ’১৯-এর এপ্রিলে নাগরিকত্ব খারিজের পর ওই দূতাবাস থেকে তাঁকে বার করে দেয় ব্রিটিশ পুলিশ। পরে জামিনের শর্তভঙ্গ করায় অ্যাসাঞ্জকে জেল হেফাজতে নেওয়া হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy