— ছবি সংগৃহীত
ইউরোপে দশ লাখের গণ্ডি ছাড়াল মৃত্যু। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ইউরোপ শাখার আঞ্চলিক ডিরেক্টর হান্স ক্লুগ। ফের সাবধান করে দিয়ে বলেন, ‘‘যত-ই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাক না কেন, পরিস্থিতি এখনও যথেষ্ট ভয়ের।’’
হান্স জানান, প্রতি সপ্তাহে ইউরোপে নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৬ লক্ষ মানুষ। অর্থাৎ, ঘণ্টায় ৯৫০০ জন। মিনিটে ১৬০ জন।
হু-এর ইউরোপ শাখার আওতাধীন ৫৩টি দেশ। এর মধ্যে দু’টি দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত নয়। রাশিয়া এবং তুরস্ক। হান্স জানান, প্রথমে কিছু দেশে সংক্রমণ কমার সামান্য লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেটা দেখে সংক্রমণ হার কমেছে ধরে নেওয়া ভুল হবে। শুধুমাত্র প্রবীণদের মধ্যে সংক্রমণ কমতে দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোর অবস্থা এখনও এক। হু-কর্তা জানান, তাঁদের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট আসছে, আইসিইউয়ে জায়গা নেই। ফ্রান্সের উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, এপ্রিল মাসে এ দেশে আইসিইউয়ে রোগী ভর্তি সর্বোচ্চ স্তর ছুঁয়েছে। টিকাকরণ কেমন চলছে, কী পর্যায়ে রয়েছে, এ সব না-ভেবে সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে যা যা করা উচিত, সেই অনুযায়ী করোনা-বিধি তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন হান্স। না-হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়তে পারে যে কোনও দিন, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ইটালি, ফ্রান্সের পাশাপাশি জার্মানির পরিস্থিতিও ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে। এ দেশের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯,৪২৬ জন
নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৯৩টি মৃত্যু হয়েছে এক দিনে। এই নিয়ে গোটা দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়াল জার্মানিতে। মৃত্যু ৮০ হাজার ছুঁইছুঁই। অর্থাৎ মৃত্যুহার অন্যান্য
দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি। প্রতি ১০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে হাজারের কাছাকাছি মৃত্যু হয়েছে জার্মানিতে। এই হিসেবে আরও এগিয়ে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইটালি। ফ্রান্সে প্রতি ১০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ১৫২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ইটালিতে ১৯১৩। ব্রিটেনে ১৮৬৫। গোটা পৃথিবীতে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একাধিক মিউটেটেড স্ট্রেন। এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্রিটেনের বি.১.১.৭ স্ট্রেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বি.১.৩৫১। এবং ব্রাজিলের পি.১। এরা শুধু অতি সংক্রামক নয়, মারণ ক্ষমতাও বেশি বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি-সহ গোটা ইউরোপে নতুন করে সংক্রমণ-ঢেউ আছড়ে পড়ার পিছনে এই মিউটেটেড স্ট্রেনগুলিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞেরা। ব্রিটেন অবশ্য এই পরিস্থিতিতেও লকডাউন শিথিল করেছে এই সপ্তাহ থেকে। আউটডোর কাফে, রেস্তরাঁ, দোকানপাটা খুলে দিয়েছে সরকার। চালু হয়েছে জিম। তিন মাস পরে খুলেছে চিড়িয়াখানা। হু-র সতর্কতা উপেক্ষা করেই
দেশের মানুষকে চাঙ্গা করতে ব্রিটেনের এই পদক্ষেপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy