—প্রতীকী ছবি
চিনের উহানে প্রথম ধরা পড়ে করোনা-সংক্রমণ। এত দিন তাই চিনকে বিদ্রূপ করে বলা হচ্ছিল ‘চিনা ভাইরাস’, কিংবা ‘উহান ভাইরাস’। আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘কুং ফ্লু’ বলে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। জনসমক্ষে একাধিক বার জাতিবিদ্বেষের প্রতিবাদ জানিয়েছে চিন। এ বার সেই একই পরিস্থিতিতে ব্রিটেন। বিশ্বে এখন করোনা-আতঙ্কের নতুন নাম ‘ব্রিটেন-স্ট্রেন’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এ বারে সহমর্মিতা দেখিয়ে নামকরণ পদ্ধতি বদলানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের এই অতিসংক্রামক স্ট্রেনটির ‘উৎস’ যখন প্রথম জানা যায়, তখন থেকেই কাঠগড়ায় ব্রিটেন। তাদের একঘরে করে দেয় ইউরোপের দেশগুলো। ‘ইউরোপের বুড়ো ঘোড়া’ বলেও ব্যঙ্গ করে অনেকে। এ বারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমেরিকায় সংক্রমণের ভয়াবহ চেহারা নেওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ ‘ব্রিটেন স্ট্রেন’। আমেরিকান সংবাদ সংস্থাগুলো লিখছে, ‘আমেরিকায় ছড়িয়েছে ব্রিটেন স্ট্রেন। আরও বাড়বে সংক্রমণ।’ প্রথম সারির একটি দৈনিক জানিয়েছে— ‘‘ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে লড়তে আরও সতর্কতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে হু।’’ ‘ইউএস সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর অনুমান, আগামী দু’মাসে গোটা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়বে ব্রিটেন-স্ট্রেন। এই অবস্থায় চূড়ান্ত অস্বস্তিতে বরিস জনসন সরকার।
গোটা বিশ্বে সব চেয়ে বেশি মাথাপিছু মৃত্যু ব্রিটেনে। সাড়ে ছ’কোটির দেশে সংক্রমিত ৩৪ লক্ষের কাছাকাছি। আর মৃত ৮৯ হাজার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নাজেহাল সরকার। দীর্ঘ লকডাউন, কড়া বিধি-নিষেধ, এমনকি সবার প্রথমে টিকাকরণ শুরু করেও শুধরোচ্ছে না কিছুই। তার উপর বিশ্ব জুড়ে বিদ্রূপ। হু-এর শীর্ষ কর্তা মাইক রায়ান জানান, এ ভাবে কোনও একটি দেশের নাম জুড়ে দেওয়া সত্যিই ঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘‘লোকে এ ভাবে ‘ব্রিটেন স্ট্রেন’ বলছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা স্ট্রেন’ বলছেন, কিন্তু দেশগুলোর তো কিছু করার নেই। তারা তো বিপর্যয়ের কারণ নয়। বরং ওরা যে ভাবে লড়ছে, তা প্রশংসনীয়।’’ হু জানিয়েছে, এ ভাবে কোনও দেশের নাম তুলে চিহ্নিত করা আটকাতে, তারা শীঘ্রই নতুন নামকরণ পদ্ধতি আনবে। ব্রিটেনে প্রথম যে করোনা স্ট্রেনটি ধরা পড়েছিল, সেটির নাম রাখা হয়েছিল ‘বি.১.১.৭’। অতি সংক্রামক স্ট্রেনটিরও এ জাতীয় কিছু নাম রাখা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ ধরনের নাম ব্যবহার করা কিছুটা কঠিন হলেও এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু র্যামবাউটের মতে, এই নামে অনেক তথ্য থাকে। যেমন, ‘বি’ হচ্ছে প্রথম যে স্ট্রেনটি উহানে মিলেছিল। ‘বি-১’ হল ইটালিতে প্রথম সংক্রমণ ঢেউয়ে ছড়িয়ে পড়া স্ট্রেনটি। র্যামবাউটের কথায়, ‘‘নামের মধ্যেই ইতিহাস ও তথ্য রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমিও গোড়ার দিকে দেশের নাম ধরে বলছিলাম। কিন্তু এখন দেখুন, ৫০টি দেশে স্ট্রেনটি রয়েছে। তবু আমরা ব্রিটেন স্ট্রেন বলছি।’’ এ যুক্তি অবশ্য চিনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy