Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Bangladesh Supreme Court Verdict

সংরক্ষণ কমাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট! আগে কেমন ছিল, এ বার কেমন হতে চলেছে নতুন নিয়োগব্যবস্থা

সংরক্ষণ নিয়ে হাই কোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিষ্ঠানে ফিরতে বলেছে আদালত।

বাংলাদেশে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন।

বাংলাদেশে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৪ ১৫:২২
Share: Save:

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কার করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কোটা সংস্কারের পক্ষেই গিয়েছে আদালতের রায়। কী ভাবে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে, তারও রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কেবল সাত শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। বাকি ৯৩ শতাংশ আসনেই নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। একই সঙ্গে কোটা সংস্কারের দাবিতে এত দিন যে ছাত্রছাত্রীরা বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে বলেছে আদালত।

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, সে দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন। তবে আগের মতো ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ আর পাচ্ছেন না তাঁরা। ৩০ শতাংশ থেকে কমে মুক্তিযোদ্ধা-সংরক্ষণ করা হয়েছে পাঁচ শতাংশ। অর্থাৎ, এখন থেকে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কেবল পাঁচ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য।

সাত শতাংশের মধ্যে বাকি দুই শতাংশ সংরক্ষণ থাকছে অন্যান্য শ্রেণির জন্য। অনগ্রসর শ্রেণি পাচ্ছে এক শতাংশ কোটা। এ ছাড়া বাকি এক শতাংশ কোটার সুবিধা পাবেন প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকেরা।

শুনানিতে সরকার পক্ষের আইজীবী আদালতে জানান, ২০১৮ সালে সংরক্ষণ নিয়ে সরকার যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। হাই কোর্টের রায়কে ‘স্ববিরোধী’ বলেও উল্লেখ করা হয়।

১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। শুরুতে সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। বাকি ৪৪ শতাংশে নিয়োগ হত মেধার ভিত্তিতে। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ।

শেখ হাসিনার সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় সাত জন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। সেই মামলায় গত ৫ জুন হাই কোর্ট জানায়, সরকারের সিদ্ধান্ত অবৈধ। আবার ফিরিয়ে আনা হয় আগের মতো সংরক্ষণ ব্যবস্থা। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনেরা ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ পেতে শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের রায়ের পরেই বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। যা গত কয়েক দিনে ক্রমশ ঝাঁজ বাড়িয়েছে। ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের বাধা এবং সংঘর্ষে ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।

হাই কোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আগেই গিয়েছিল হাসিনা সরকার। আগামী ৭ অগস্ট তার শুনানির কথা ছিল। দেশের ক্রমবর্ধমান অশান্তির আবহে শুনানি এগিয়ে আনা হয়। রবিবার সেই শুনানি হল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। রায় অনুযায়ী দ্রুত সরকারকে বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE