Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hikikomori

‘হিকিকোমোরি’ ছড়াচ্ছে জাপানে, কোভিডের পরে দেশ জুড়ে ব্যাপক হারে বাড়ছে ‘রোগের’ সংক্রমণ

হিকিকোমোরি হল এমন এক সমস্যা, যাতে মানুষ সম্পূর্ণ ভাবে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দিয়ে বিচ্ছিন্নবাস জীবন কাটাতে চায়।

Hikikmori

জাপান জুড়ে ব্যাপক হারে বাড়ছে ‘হিকিকোমোরি’। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
টোকিয়ো শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৮
Share: Save:

অসুখের নাম ‘হিকিকোমোরি’। কোভিড অতিমারির পরে জাপান জুড়ে ব্যাপক হারে বাড়ছে এই ‘রোগের’ সংক্রমণ। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা হয়েছে জাপানে। তাতে দেখা গিয়েছে, দেশের একটা বড় অংশ সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, যাকে জাপানি ভাষায় বলে হিকিকোমোরি। দেশের কমপক্ষে ১৫ লক্ষ কর্মক্ষম মানুষ এই সামাজিক অনীহায় আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এর জন্য অনেকাংশে দায়ি অতিমারি। সমস্যা ছিলই জাপানে, কিন্তু তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে অতিমারি ও তার বয়ে আনা নিভৃতবাস জীবন।

হিকিকোমোরি হল এমন এক সমস্যা, যাতে মানুষ সম্পূর্ণ ভাবে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দিয়ে বিচ্ছিন্নবাস জীবন কাটাতে চায়। হিকিকোমোরি শব্দটায় মূলত অল্পবয়সিদের কথা বলা হয়। এ ‘রোগের’ উপসর্গ হল— সকলের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া। দিনের পর দিন বাড়ির চৌহদ্দিতে আটকে থাকা, কখনও বছরের পর বছর। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সমাজব্যবস্থার চাপেই এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। যেমন, শিক্ষাক্ষেত্রে বিশাল প্রত্যাশা, ভয়ানক প্রতিযোগিতা এবং ক্রমে একা হয়ে পড়া। এর থেকে মনের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে, দুঃখের পাহাড় জমছে মনে এবং শেষমেশ সমাজের প্রতি আতঙ্ক।

প্রাথমিক ভাবে এক-দু’টো মানুষ হিকিকোমোরি আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু সংখ্যা বাড়তে বাড়তে যখন অনেক, তখন তার প্রভাব পড়ছে গোটা সমাজেই। এ সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামাজিক ক্ষতির পাশাপাশি লড়তে হচ্ছে অর্থনৈতিক জটিলতার সঙ্গে। কারণ কর্মসংস্থান হচ্ছে না, ফলে ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সম্পর্ক স্থায়ী হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ভাবে চললে তার প্রভাব বিশালাকার ধারণ করবে। দেশে জন্মহার ভয়ানক ভাবে কমবে, বার্ধক্য বাড়বে। ক্রমে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পরিস্থিতি এতটাই আশঙ্কাজনক বলে মনে করছে সরকার, যে বিষয়টি নিয়ে তারা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।

গত বছর নভেম্বর মাসে এ নিয়ে সমীক্ষা করেছিল জাপানের মন্ত্রিসভার দফতর। ১০ থেকে ৬৯ বছর বয়সি ৩০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন এই সমীক্ষায়। দেখা গিয়েছে, ১৫ থেকে ৬২ বছর বয়সিদের মধ্যে ২ শতাংশ হিকিকোমোরিতে আক্রান্ত। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে এই সমস্যা আরও বাড়ছে। আগামী জুন মাস থেকে টোকিয়ো প্রশাসন অনলাইন মেটাভার্সে বিভিন্ন সামাজিক জমায়েতের ব্যবস্থা করবে। সেখানে হিকিকোমোরি আক্রান্তরা অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, টোকিয়োতে অন্তত ৯ হাজার মানুষ হিকিকোমোরি আক্রান্ত। এর মধ্যে এমন অনেক পড়ুয়া রয়েছে, যারা স্কুল-কলেজ যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে!

অন্য বিষয়গুলি:

Japan Isolation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy