একুশে বইমেলার বাইরে বৃহস্পতিবার রাতে সন্দেহভাজন মৌলবাদীদের হাতে লেখক অভিজিৎ রায় খুন হওয়ার পর পুলিশ বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সাইবার জগতে নজরদারির পরিকাঠামো না-থাকায় তদন্তে খুব একটা এগোতে পারেননি তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়ায় কিছুটা হলেও আশার মুখ দেখছে বাংলাদেশ পুলিশ।
আনসারুল্লা বাংলা নামে একটি স্বঘোষিত জঙ্গি সংগঠন অভিজিৎকে খুনের দায় স্বীকার করেছে। তাদের ট্যুইটারে স্পষ্ট, বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই তারা অভিজিতের গতিবিধি নজরে রেখেছিল। কিন্তু তার পরেও অবাধে তারা তাদের ‘টার্গেট’কে নিকেশ করতে পারায় পুলিশ-প্রশাসনের ওপর মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। শুক্রবারই বিভিন্ন সংগঠন মিছিল-সমাবেশ করে অভিজিৎ খুনের বিচার চেয়েছেন। মুক্তচিন্তার এই লেখকের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এ বার মার্কিন বিদেশ দফতর ও রাষ্ট্রপুঞ্জ সরব হওয়ায় বিষয়টি নতুন মাত্রা পেল।
শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুনের দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, “লেখকের ওপর হামলা ও খুনের এই ঘটনা চরম নিন্দনীয়। বাংলাদেশে বিশিষ্ট জনেদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” বান কি মুনের তরফে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, অভিজিতের খুনিদের নিশ্চয়ই বিচারের আওতায় আনা যাবে। মার্কিন প্রবাসী অভিজিতের খুনের ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর কাপুরুষতা ও বর্বরতা’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র জেন সাকি। তিনি বলেন, “এই ঘটনা শুধু মার্কিন প্রবাসী এক ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখিত মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের ওপর চরম আঘাত।” সাকি বলেন, অভিজিৎ ছিলেন এক জন সাংবাদিক, মানবতাবাদী, এক জন স্বামী ও বাবা। তাঁর খুনের তদন্তে মার্কিন প্রশাসন সাহায্য করতে প্রস্তুত।
এ দিন ভোরেই চট্টগ্রামের কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়ে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব। বিপুল অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশে তালিবান শাসন কায়েমের লক্ষ্য নিয়ে এই সব জঙ্গিরা বড়সড় নাশকতার চক্রান্ত করছিল। পুলিশের একটি অংশ এই জঙ্গিদের সঙ্গে অভিজিতের খুনের সম্পর্ক জোড়ার চেষ্টা করলেও, অন্য একটি অংশ তা মনে করে না। তাদের দাবি পরিকাঠামোর অভাবের কারণেই অভিজিতের খুনের তদন্তে এগোনো যাচ্ছে না। তবে রাজধানী ঢাকার রাস্তায় নজরদারি বাড়ানো যে প্রয়োজন, তা মানছেন সকলেই। এ দিন খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-ও অভিজিৎ খুনের দ্রুত বিচার চেয়েছে। তবে শাসক আওয়ামি লিগ দাবি করেছে, বিএনপির শরিক মৌলবাদী জামাতে ইসলামির ছত্রচ্ছায়াতেই আনসার বাংলাদেশের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির বাড়বাড়ন্ত। অভিজিতের বাবা অজয় রায়ও এই অভিযোগ করেছেন। এই খুনের পরে তাই বাংলাদেশে জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবি ফের তুলেছে বিভিন্ন ছাত্র ও নাগরিক সংগঠন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy