প্রতীকী ছবি।
ঠিক এক সপ্তাহ আগের কথা। গত বুধবার আমেরিকায় প্রথম ‘ফ্লুরোনা’ সংক্রমণের খোঁজ মিলেছিল। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক কিশোরের শরীরে প্রথম ধরা পড়ে একই সঙ্গে করোনা ও ফ্লু সংক্রমণ। মানবদেহে সমান্তরাল ভাবে এই দুই ভাইরাসের আক্রমণকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা নাম দিলেন ‘ফ্লুরোনা’। প্রথম ধরা পড়েছিল ইজ়রায়েলে। করোনার নতুন স্ট্রেন ‘ওমিক্রন’-এ যতটা না ভয় পেয়েছে আমেরিকা, তার থেকেও যেন বেশি ভয় পেয়েছে এই ‘ফ্লুরোনা’য়।
যে কিশোরটি প্রথম এক যোগে দু’টি ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল, তার কোভিডের প্রতিষেধক নেওয়া ছিল না। আমেরিকায় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্লু-র প্রকোপ অত্যন্ত বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, বছরে অন্তত ২০ হাজার আমেরিকান ফ্লুতে মারা যান। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ২০২১-এ ফ্লুর প্রতিষেধকও অনেক কম নেওয়া হয়েছে। এ দিকে, ওমিক্রনের দাপটে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণও। ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা। তাই একই সঙ্গে কোভিডের ‘বুস্টার ডোজ়’ এবং ‘ফ্লু শট’ নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে সেন্টার্স ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
এ দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবাক্ষেত্রে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কোভিডের প্রতিষেধক নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় অনেকে কাজ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এই ছবিটা বলে দিচ্ছে, এ দেশে অনেকেই এখন টিকা নেওয়ার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত নন। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, আমেরিকার নাগরিকদের এই প্রতিষেধকহীন অংশ (১৫ শতাংশ, বলছে সিডিসি-র রিপোর্ট) এই শীতে ‘ফ্লুরোনা’য় আক্রান্ত হতে পারেন।
ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের ফলে হাসপাতালে হাসপাতালে আক্রান্তের ঢল। সংক্রমিত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীরা। পরিস্থিতির মোকাবিলায় আমাদের প্রদেশ জর্জিয়ার দশটি হাসপাতালে নেমে পড়েছে ন্যাশনাল গার্ড। আটলান্টার ছ’টি হাসপাতালের কর্মকর্তারা একত্রে সবাইকে আর্জি জানাচ্ছেন, যাতে প্রতিষেধক নিয়ে সাধারণ মানুষ তাঁদের কর্তব্যটি পালন করেন। এই ছ’টি হাসপাতাল হল— ‘চিল্ডরেনস হেল্থ কেয়ার অব আটলান্টা’, ‘এমোরি হেল্থ কেয়ার’, ‘গ্রেডি হেল্থ সিস্টেম’, ‘নর্থ ইস্ট জর্জিয়া হেল্থ সিস্টেম’, ‘পিয়েডমন্ট হেল্থ কেয়ার’ এবং ‘ওয়েলস্টার হেলথ সিস্টেম’। এ ছাড়া, ভাঙা রেকর্ডের মতো সিডিসি-ও তাদের তিন সতর্কীকরণের কথা সবাইকে বলে চলেছে, অনুরোধ করছে সাধারণ মানুষ যাতে ‘তিন ডব্লিউ’ অনুসরণ করে চলে— ১। ওয়াশ হ্যান্ড (হাত ধুতে থাকুন), ২। ওয়্যার মাস্ক (মুখোশ পরুন) এবং ৩। ওয়াচ ডিসট্যান্স (দূরত্ব বজায় রাখুন)।
গত সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষা বর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এখনও পর্যন্ত মাস্ক বাধ্যতামূলক করা যায়নি। একটি সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট, ‘পাবলিক স্কুল সিস্টেম’-এ যে সব ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে, তাদের মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ মাস্ক পরে। এত দিন পরে পুরোদস্তুর অফলাইন পদ্ধতিতে পড়াশোনা শুরু হয়েছে এ দেশে। অসাবধানতা, অসচেতনতা ও দায়সারা মনোভাবের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসের কিশোরটির মতো আরও অসংখ্য পড়ুয়া ‘ফ্লুরোনা’য় আক্রান্ত না হয়, সেটাই সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
Business
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy