গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভয়াবহ খাদ্যসঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে চার মাস আগেই জানিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ‘রাষ্ট্রপুঞ্জ উন্নয়ন কর্মসূচি’ (ইউএনডিপি)। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তহবিল বরাদ্দ ছাঁটাই করায় খাদ্যের জোগান কমেছে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরগুলিতেও। এই আবহে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্যে এগিয়ে এল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার।
ডব্লিউএফপির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৬২৫ কোটি টাকা) আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। বৃহস্পতিবার মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এই ঘোষণা করে এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘‘ডব্লিউএফপির মাধ্যমে এই খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তায় ১০ লক্ষের বেশি মানুষ উপকৃত হবেন।’’ প্রসঙ্গত, খাদ্যসঙ্কটের আবহেও পর্যাপ্ত তহবিল না থাকার অজুহাত দেখিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাকে কার্যত অনাহারের মুখে ঠেলে দিয়েছিল ডব্লিউএফপি। কিন্তু তাদের পাশে দাঁড়াল ট্রাম্প প্রশাসন।
২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ হল আমেরিকা। এ পর্যন্ত প্রায় ২৪০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে তারা। চলতি মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সঙ্গে নিয়ে মায়ানমার থেকে উৎখাত হয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছিলেন। এর পরে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সেই আবেদনে সাড়া দিল আমেরিকা।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালে নভেম্বর থেকে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে সে দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ। গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজ়োরামেও শরাণার্থী অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের বড় অংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা (যে প্রদেশের ৯০ শতাংশ অংশ এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাখাইন আর্মির দখলে) রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণের উপরেই নির্ভরশীল। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র এই পরিস্থিতিতে অন্য দেশগুলিকেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় সক্রিয় হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।