ডোনাল্ড ট্রাম্প।ফাইল চিত্র।
ভোটগণনার প্রবণতা জো বাইডেনের দিকে সামান্য ঝুঁক পড়ার পর থেকেই ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ তুলে সরব ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি, আদালতে পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছেন সেই নালিশ। আদালত হতাশ করলেও সুর আরও চড়ালেন ট্রাম্প। পরপর টুইট করে রবিবার জো বাইডেন তথা ডেমোক্র্যাটদের ‘চোর’ বলে কটাক্ষ করলেন ট্রাম্প। ভোট চুরির জন্যই তিনি হেরেছেন বলেও তোপ দেগেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী।
ভোটগণনা পর্বে ট্রাম্প কখনও বলছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। কখনও দেরিতে পৌঁছনো ব্যালটকে বৈধ ঘোষণার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। টুইটারে হুঙ্কার ছেড়েছেন, বন্ধ করুন ভোট গণনা। সেই সব অভিযোগে অন্তত তিনটি রাজ্যের গণনা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালত পত্রপাঠ ফিরিয়ে দিয়েছে সেই অভিযোগ। তবে খুব সামান্য ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হওয়ায় পুনর্গণনা হয়েছে জর্জিয়ায়। কিন্তু এত কিছুতেও দ্বিতীয় বারের জন্য হোয়াইট হাউসের দরজা খোলেনি ট্রাম্পের জন্য।
বিষয়টি নিশ্চিত হতেই একের পর টুইটারে বোমা ফাটিয়ে চলেছেন ট্রাম্প। রবিবার তাঁর টুইট, ‘‘আমরা মনে করি এই লোকগুলো চোর। যন্ত্রগুলো সব দুর্নীতিগ্রস্ত। এটা চুরির নির্বাচন। ব্রিটেনের সেরা ভোট বিশেষজ্ঞ বলেছেন, যে এটা পরিষ্কার চুরির ভোট ছিল এই কারণে যে, কিছু রাজ্যে বারাক ওবামাকেও টপকে গিয়েছেন জো বাইডেন।’’ টুইটে ট্রাম্পের আরও দাবি, ‘‘পার্থক্যটা সেখানেই গড়ে দিয়েছে যে, ওঁরা যা চুরি করতে চেয়েছিলেন সেটা করেছেন।’’
“We believe these people are thieves. The big city machines are corrupt. This was a stolen election. Best pollster in Britain wrote this morning that this clearly was a stolen election, that it’s impossible to imagine that Biden outran Obama in some of these states.
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) November 8, 2020
কিন্তু প্রশ্ন হল, তাঁর কথা শুনছেন কে? আদালতই যখন খারিজ করে দিয়েছে, তখন আর কোথায় যাবেন তিনি। উল্টো দিকে ট্রাম্পের এই রকম ভূরি ভূরি অভিযোগকে একেবারেই পাত্তা দিতে নারাজ বাইডেনের ডেমোক্র্যাট শিবির। তাঁরা বরং জয়ের আনন্দ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন। হেরে যাওয়ার পর ট্রাম্পর এই সব মন্তব্য তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের মতো উপেক্ষা করছেন তাঁরা। মন্তব্য করারও প্রয়োজন মনে করছেন না।
অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে বিখ্যাত আমেরিকান পরিচালক অরসন ওয়েলস-এর ‘সিটিজেন কেন’ সিনেমার কথা। বিখ্যাত সংবাদপত্র ব্যবসায়ী উইলিয়াম র্যানডল্ফ এর জীবনীর উপর ভিত্তি করে ওই ছবি তৈরি হয়েছিল। মূল চরিত্র ছিলেন ‘কেন’, যিনি সংবাদপত্রের মালিক এবং তিনি আমেরিকার নির্বাচনে প্রার্থী। ছবির একটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, ভোটগণনা চলছে। তখনও জয় পরাজয় নির্ধারণ হয়নি। কেন-এর সংবাদপত্রের সাংবাদিকরা দু’টি শিরোনাম তৈরি করে রাখছেন। প্রথমটি ‘জিতলেন কেন’। অন্য শিরোনাম, ‘ভোটে কারচুপি’। অর্থাৎ জিতলে ভোট বা গণনা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। হারলেই কারচুপি।
এই ধরনের ভোটিং মেশিনে কারচুপি বা ব্যালটে জালিয়াতির অভিযোগ মূলত প্রাচ্যের সংস্কৃতি। ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মতো দেশগুলির নেতা-নেত্রীদের মুখে এই ধরনের কথা শোনা যায়। সে দিক থেকে ট্রাম্পের এমন অভিযোগও আমেরিকার নির্বাচনের ইতিহাসে খুব কমই উঠেছে। কখনও সখনও তেমন অভিযোগ উঠলেও আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এতটা জোরালো ভাবে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন বলে মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy