জেনেভার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু নিত্যানন্দের দেশ রিপাবলিক অব কৈলাসের রাষ্ট্রদূত মা বিজয়প্রিয়া নিত্যানন্দ। ফাইল চিত্র।
অলীক দেশ ‘কৈলাস’কে নিয়ে ফাঁপড়ে পড়েছে আমেরিকার এক শহর। কিছুদিন আগেই ‘রিপাবলিক অব কৈলাস’-এর সঙ্গে মহা ধুম ধামে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল তারা। এখন জানা গিয়েছে, যে দেশের সঙ্গে চুক্তি তাদের কোনও অস্ত্বিত্বই নেই। না জেনেবুঝেই এক মস্ত বড় প্রতারণাকে সরকারি স্বীকৃতির শিলমোহর দিয়ে ফেলেছে তারা। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে এখন আফশোস করছে আমেরিকার ওই নগর প্রশাসন বলছে, ‘‘বড় ভুল হয়ে গিয়েছে’’।
স্বঘোষিত ভারতীয় ধর্মগুরু নিত্যানন্দের তৈরি কাল্পনিক দেশ ‘রিপাবলিক অব কৈলাস’ কথা প্রকাশ্যে আসে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। জেনেভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন এই কাল্পনিক দেশের ‘রাষ্ট্রদূত’ মা বিজয়প্রিয়া নিত্যানন্দ। বৈঠকেই ‘রিপাবলিক অব কৈলাসের’ কথা জানিয়ে বিজয়প্রিয়া জানতে চান তাঁদের দেশের প্রতিষ্ঠাতার সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? তার পর থেকেই এই কাল্পনিক দেশের আইন কানুন প্রশাসন নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। বিজয়প্রিয়া জানিয়েছেন, তাঁদের দেশ হিন্দু ধর্ম পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এমনকি, যে নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে ভারতে ধর্ষণের মামলা চলছে, তাকে ভারতে নির্যাতন করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ‘নিত্যান্দের দেশ কৈলাসের’ রাষ্ট্রদূত। এই নিয়ে যখন তুমুল চর্চা চলছে, তখনই ঘটনাটি খবর পৌঁছয় আমেরিকার শহর নেওয়ার্কে। নিউজার্সির এই শহরের সঙ্গে দিন কয়েক আগেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল কল্পনার দেশ কৈলাস। সিস্টার সিটি নামের ওই চুক্তির ফলে কৈলাসকে সমস্ত রকম অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সহায়তা দিতে অঙ্গীকার করেছিল নেওয়ার্ক প্রশাসন। রবিবার সেই চুক্তি প্রসঙ্গে নেওয়ার্ক প্রশাসন বলেছে পুরোটাই একটা মস্ত বড় ভুল ছিল। তবে যেহেতু গোটা বিষয়টিই প্রতারণার উপর নির্ভর করে হয়েছিল, তাই এই চুক্তি আর বৈধ নয়।
দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরের সরকারের কাছ থেকে একটি ছোট্ট দ্বীপের জমি কিনে সেখানেই তৈরি হয়েছে ‘রিপাবলিক অব কৈলাস’। বিজয়প্রিয়া জেনেভার বৈঠকে জানিয়েছিলেন সেখানে শুধু হিন্দুরাই থাকেন। এমনকি, বাসিন্দাদের বিনামূল্যে বহু পরিষেবাও দেওয়া হয়। নেওয়ার্ক জানিয়েছে, তারা বরাবরই বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে এবং সেই সম্পর্কের প্রতি দায়িত্ববদ্ধ থেকেছে। পরস্পরকে সমৃদ্ধ, পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং স্বীকৃতি প্রদর্শন এবং সমর্থন-সাহায্য জোগানোই এই ধরনের সম্পর্কের লক্ষ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই সম্পর্ক তৈরি হয়েছে প্রতারণার উপর ভিত্তি করে। নেওয়ার্কের শহরের পুর সদস্য লুই কুইনটানা জানিয়েছেন, নেওয়ার্ক এমন কোনও শহরের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করতে চায় না, যেখানে সামান্য মানবাধিকার আইনও মানা হয় না। আর যেখানে এ ধরনের আইন ভাঙার মতো বিতর্ক রয়েছে, সেখানে নেওয়ার্ক নিজের নাম জড়াতেই চায় না। কুইনটানা বলেছেন, ‘‘নজর এড়িয়ে যাওয়াতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এই জেনেবুঝে এই ভুল বয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy