Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
US Capitol Violence

১০ দিনও কি টিকে থাকবেন না ট্রাম্প

৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের আগে এই ধরনের পোস্ট ছেয়ে ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪৬
Share: Save:

‘ট্রাম্প না যুদ্ধ, বেছে নিন।’

‘বন্দুক চালাতে জানেন না। এখনই শিখে নিন।’

‘সরকারি ভবনে তাণ্ডব চালাব। পুলিশ মারব, নিরাপত্তাকর্মীদের মারব, সরকারি কর্মীদের মারব। যত ক্ষণ না ব্যালট পুনর্গণনা হচ্ছে।’

৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের আগে এই ধরনের পোস্ট ছেয়ে ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি পুলিশ, প্রশাসন বা সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। যার ফল ভুগতে হয়েছে সে দিন।

এ বার আর সে ভুল করবে না ক্যাপিটল পুলিশ। ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন দেশের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জোসেফ বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। সেই অনুষ্ঠানে যাতে ট্রাম্প-সমর্থকেরা কোনও হাঙ্গামা না-করতে পারে, তার জন্য জোরদার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। তবু আশঙ্কা থাকছেই।

ফের ইমপিচমেন্টের মুখে!

ইমপিচমেন্ট মানে কী?

• প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া। আদতে এই ইমপিচমেন্ট-এর অর্থ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোনও বড় অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহ বা বেআইনি কাজের অভিযোগ আনা।

পদ্ধতি কী?

• কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ বা হাউজ় অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যায়। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেলে প্রস্তাবটি সেনেটে যায়। সেখানে বিচার প্রক্রিয়া চলে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারেন। প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করতে বা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সেনেটরের সমর্থন প্রয়োজন। পুরো বিচার প্রক্রিয়া দেখবেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি।

প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার পরেও কি ইমপিচমেন্ট কার্যকর থাকবে?

• প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবেও ট্রাম্পকে ইমপিচ করা যেতে পারে। দোষী সাব্যস্ত হলে সেনেটে ভোট দিয়ে ভবিষ্যতে তাঁকে কোনও সরকারি পদে আসীন হওয়া থেকে আটকানো যাবে। সে ক্ষেত্রে ২০২৪ সালে তাঁর ভোটে দাঁড়ানোও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হতে পারে?

১) ক্যাপিটলে হামলায় মদত দেওয়া যা রাষ্ট্রদোহের সমান।

২) জর্জিয়ার ভোটে কারচুপি করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা।

কত দ্রুত ট্রাম্পকে ইমপিচ করা যাবে?

• চাইলে কয়েক দিনের মধ্যেও তা করা সম্ভব। কংগ্রেস তার বিশেষ ক্ষমতাবলে আইন বদলে ২০ জানুয়ারিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেও তা করতে পারে।

আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কি দু’বার ইমপিচমেন্ট আনা হয়েছে?

• না। তবে সংবিধান অনুযায়ী কংগ্রেসের সেই ক্ষমতা রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির উদ্যোগে হাউজ় অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। অবশ্য হাউসে প্রস্তাব পাশ হলেও রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সেনেটে তা অনুমোদন পায়নি। ফলে সে যাত্রায় জিতে যান ট্রাম্প।

বসে নেই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিও। ফেসবুক, যার অধীনে রয়েছে আরও দু’টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ— হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম, ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ব্লক করে দিয়েছে। এ বার সেই পথেই হেঁটে আরও কড়া পদক্ষেপ করল টুইটার। ট্রাম্পকে আজীবন ‘সাসপেন্ড’ করে দিয়েছে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি। এমনকি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করতে পারবেন না ডোনাল্ড। টুইটারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘@realDo•aldTrump অ্যাকাউন্টের সব টুইট পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থা।’ টুইটারের এই সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের জবাব ‘‘আমাদের চুপ করানো যাবে না।’’ তিনি জানিয়েছেন, নিজেই একটি মাইক্রোব্লগিং সাইট খোলার ভাবনা-চিন্তা করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাত্য হয়ে যাওয়া ছাড়াও ট্রাম্পের সামনে ঝুলছে ইমপিচমেন্ট খাঁড়া। ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। অর্থাৎ, সাকুল্যে আর দশ দিন হাতে রয়েছে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের। সেই কয়েকটা দিনও ট্রাম্প আর মসনদ ধরে রাখতে পারবেন কি না, শুক্রবার দিনভর সেই প্রশ্নে সরগরম ছিল ক্যাপিটল। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে ট্রাম্প-ভক্তদের ‘বাঁধভাঙা’ তাণ্ডবের জন্য একবাক্যে প্রেসিডেন্টকেই দায়ী করছেন সবাই। এ নিয়ে নিজের দলেও অসন্তোষ দানা পাকিয়েছে। যার ফলে বাড়তি জোর পেয়ে গিয়েছেন ডেমোক্র্যাটেরা। শুক্রবার হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের স্পিকার, ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি জানান, ট্রাম্প এই মুহূর্তে ইস্তফা না-দিলে তাঁর বিরুদ্ধে এখনই ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনা হবে। যাতে কগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা সায় দিলেই সরতে হবে প্রেসিডেন্টকে। তা সে মেয়াদের আর যত দিনই বাকি থাকুক না কেন। পেলোসির কথায়, ‘‘আমরা আশা করছি, প্রেসিডেন্ট নিজের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হয়ে নিজেই ইস্তফা দেবেন। তা যদি তিনি না করেন, তা হলে নীতি সংক্রান্ত কমিটি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করতে কালক্ষেপ করবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

US Capitol Violence Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy