বাংলাদেশের রাস্তায় কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছে। ছবি: রয়টার্স।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে এ বার মুখ খুলল রাষ্ট্রপুঞ্জ। বার্তা দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক শুক্রবার বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরনের হামলাকে ‘বিস্ময়কর’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বাংলাদেশ নিয়ে এই প্রথম রাষ্ট্রপুঞ্জের কেউ মন্তব্য করলেন।
সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। আন্দোলনের পুরোভাগে রয়েছেন সে দেশের ছাত্রছাত্রীরাই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ে গত সোমবার থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় ছাত্রবিক্ষোভ। পুলিশের গুলিতে ছ’জন ছাত্রের মৃত্যুও হয়। এর পরেই বাংলাদেশের নানা প্রান্তে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আগুন। পথে নামেন অগুনতি মানুষ। চাকরি থেকে জনজাতিদের জন্য সংরক্ষণ বাদ দিয়ে বাকি সমস্ত কোটা তুলে দেওয়ার দাবি জোরালো হয়। এই আন্দোলনে প্রায় প্রতি দিনই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছে। সংবাদ সংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৫। এই পরিস্থিতি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্তা।
ভলকার শুক্রবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, আমি তা নিয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। বহু ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে হিংসার কারণে। আহতের সংখ্যাও প্রচুর। বিশেষত, আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি বিস্ময়কর।’’
ভলকারের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর কারা হামলা চালাল, তা খুঁজে বার করা প্রয়োজন। এর জন্য অবিলম্বে নিরপেক্ষ এবং সম্পূর্ণ তদন্ত প্রয়োজন। যাঁরা দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা দরকার।’’
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি হাসিনা সরকারকেও বার্তা নিয়েছেন ভলকার। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার সেনা নামানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের। সরকারের প্রতি তাঁর অনুরোধ, দেশের ছাত্রদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হোক, শান্তিপূর্ণ ভাবে তাঁদের আন্দোলন করতে দেওয়া হোক এবং কোনও রকম হামলার আশঙ্কা ছাড়াই যাতে স্বাধীনতার অধিকার সুরক্ষিত হয়, তা নিশ্চিত করুক সরকার।
বাংলাদেশে ছাত্রবিক্ষোভ শুক্রবার সবচেয়ে ভয়ানক আকার নিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের নানা প্রান্তে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। মৃত্যু হয় বহু ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকের। রাতে দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করে সরকার। নামানো হয় সেনা। বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, একাধিক জায়গায় ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ। ঢাকার বহু এলাকায় গুলিও চলেছে। সংঘর্ষে মৃতের কোনও পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ সরকার। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। কিন্তু ছাত্রেরাও অনড়। ঢাকা শহরে যে কোনও রকমের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy