গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভয়াবহ খাদ্যসঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে চার মাস আগেই জানিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ‘রাষ্ট্রপুঞ্জ উন্নয়ন কর্মসূচি’ (ইউএনডিপি)। কিন্তু সঙ্কটের এই আবহেও পর্যাপ্ত তহবিল না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের পড়শি দেশের প্রায় ১০ লক্ষ নাগরিককে কার্যত অনাহারের মুখে ঠেলে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
ডব্লিউএফপির তরফে জানানো হয়েছে, তহবিল সঙ্কটের কারণে এপ্রিল মাস থেকে মায়ানমারের ১০ লক্ষের বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে না। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে সে দেশে কার্যত দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সঙ্গে নিয়ে মায়ানমার থেকে উৎখাত হয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছিলেন। তার পরেই ডব্লিউএফপির তরফে ওই বার্তা এসেছে।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালে নভেম্বর থেকে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে সে দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ। ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ হাতছাড়া হয়েছে জুন্টা সরকারের। গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে মায়ানমারের প্রায় দেড় কোটি নাগরিক খাদ্যসঙ্কটের মুখে বলে ইউএনডিপির রিপোর্টে জানানো হয়েছে। গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজ়োরামেও শরাণার্থী অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের বড় অংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা (যে প্রদেশের ৯০ শতাংশ অংশ এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাখাইন আর্মির দখলে) রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণের উপরেই নির্ভরশীল।