ফাইল ছবি
তালিবানের উপরে নিষেধাজ্ঞা রেখেই অর্থসঙ্কটে ভুগতে থাকা আফগানিস্তানের সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। অবাধে ত্রাণ পৌঁছনোর এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে ভারত। তালিবানও এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তোলা হবে বলে তারা আশাবাদী।
তালিবান কাবুল দখলের পরেই তীব্রতর হয়েছে আফগানিস্তানের আর্থিক সঙ্কট। বিশ্ব ব্যাঙ্ক সাহায্য বন্ধ করেছে। আমেরিকা সে দেশে গচ্ছিত আফগান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সাড়ে ন’শো কোটি ডলার আটকে দিয়েছে। পড়েছে আফগানি মুদ্রার দাম। আফগানিস্তানের জিডিপি-র ৪০ শতাংশ এবং বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ বিদেশি সাহায্যের উপরে নির্ভরশীল। অথচ শীতের মুখে সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো অর্থও তালিবান সরকারের নেই। এই পরিস্থিতিতে মানবিক সঙ্কট এড়াতে সাধারণ আফগানদের জন্য ত্রাণ পৌঁছনোর প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে আনে আমেরিকা।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তালিবানের উপরে নিষেধাজ্ঞা রেখেই আগামী এক বছর ধরে আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছবে। ত্রাণের তহবিল যাতে তালিবানের হাতে না পড়ে, প্রস্তাবে সে কথাও উল্লেখ করেছে আমেরিকা। কাজেই এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে আর্থিক সমন্বয়ের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক সাহায্য বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি মার্টিন গ্রিফিথস জানান, এই প্রস্তাবের ফলে ১৬০টিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আফগানদের জন্য খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহায়তা পৌঁছে দিতে পারবে। ত্রাণ ঠিক জায়গায় পৌঁছচ্ছে কি না, তা পর্যালোচনা করে ছ’মাস অন্তর রিপোর্ট দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের মদতে তালিবান-শাসিত আফগানিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাস পাচার নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। কাজেই মানবিক সাহায্যের অর্থ যাতে অন্য খাতে ব্যবহৃত না হয়, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সেই বিষয়টিতে জোর দিয়েছে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের দূত টি এস তিরুমূর্তি বলেছেন, ‘‘জাতি, ধর্ম বা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে কোনও বৈষম্য ছাড়াই ওই সাহায্য অবাধে সবার কাছে পৌঁছনো প্রয়োজন। এই তহবিলের অন্যত্র ব্যবহার বা অপব্যবহার যাতে না হয়, নিরাপত্তা পরিষদ যেন তা নজরে রাখে।’’ মহিলা, শিশু ও সংখ্যালঘুদের মতো বিপন্ন অংশের আগে সাহায্য দরকার বলেও জানিয়েছে ভারত।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে একাধিক ইসলামি দেশ। তালিবান মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদ বলেছেন, ‘‘আমরা বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি, অর্থনীতি ও ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের উপর থেকে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পথে এগোবে আন্তর্জাতিক মহল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy