Advertisement
E-Paper

রোহিঙ্গাদের রক্ষায় সু চি-কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের

মায়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৫১ সাল থেকে চালু হওয়া ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ লঙ্ঘনের মতো অভিযোগও ওঠে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে বিপাকে মায়ানমার।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে বিপাকে মায়ানমার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:২১
Share
Save

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে আগেই পড়েছিল মায়ানমার। এ বার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-তেও মুখ পুড়ল আউং সান সু চি প্রশাসনের। টানা শুনানির পর, বৃহস্পতিবার দ্য হেগের ওই আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষা করতে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে মায়ানমারকে।

সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বা অন্য কোনও ভাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর মতো পদক্ষেপ বন্ধ করতে ‘ক্ষমতা অনুযায়ী সবরকম ব্যবস্থা’ নিতে মায়ানমারকে নির্দেশ দিয়েছে আইসিজে। আন্তর্জাতিক ওই আদালত মেনে নিয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলিমরা ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

২০১৬ সালের অক্টোবর মাস থেকেই রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর ধারাবাহিক ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠতে থাকে। যত দিন গড়াতে থাকে ততই বাড়তে থাকে অভিযোগের তালিকা। ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন মায়ানমারের নেত্রী সু চি। কিন্তু, সেই সু চি সরকারের সেনার বিরুদ্ধেই রোহিঙ্গাদের খুন এবং উৎখাত, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে ৫৭টি দেশের মিলিত মঞ্চ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)। ওই আন্তর্জাতিক মঞ্চের তরফে গাম্বিয়াই রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্বোচ্চ আদালতের গোচরে নিয়ে আসে। আফ্রিকার ওই দেশটির আইনি বিশেষজ্ঞরা মায়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৫১ সাল থেকে চালু হওয়া ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ লঙ্ঘনের মতো মারাত্মক অভিযোগ তোলেন। সেই সঙ্গে মায়ানমারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আবেদন জানান তাঁরা।

মায়ানমারের ছেড়ে বাংলাদেশের পথে রোহিঙ্গারা। —ফাইল চিত্র

এ দিন আইসিজে গাম্বিয়ার আবেদনের পক্ষে নির্দেশ দিয়েছে বটে। কিন্তু, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মায়ানমারকে ঠিক কী করতে হবে তা নির্দিষ্ট করে বলেনি। তবে, রোহিঙ্গাদের হত্যা করা বা তাদের উপর শারীরিক বা মানসিক কোনও রকম নির্যাতন করা যাবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছে আইসিজে। মায়ানমার কী ধরনের পদক্ষেপ করছে, তা চার মাস পর আন্তর্জাতিক আদালতে জানাতে বলেছেন বিচারপতি সোমালিয়ার আবদুলাকি আহমেদ ইউসুফ নেতৃত্বাধীন জুরিরা। যত দিন পর্যন্ত এই মামলা চলবে তত দিন পর্যন্ত প্রতি ছ’মাস অন্তর রিপোর্টও দিতে বলা হয়েছে সু চি সরকারকে।

আইসিজে-র এই রায়ে খুশি মানবাধিকার সংগঠনগুলি। তবে, ওই রায়ের প্রয়োগ নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। মানবাধিকার সংগঠন বার্মা ক্যাম্পেন ইউকে-র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যানা রবার্ট বলছেন, ‘‘আউং সান সু চি সরকারের এই রায় কার্যকর করার সম্ভাবনা শূন্য। যত ক্ষণ না পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: ‘চিন ভাল বন্ধু, উইঘুরদের উপর নির্যাতন নিয়ে তাই প্রকাশ্যে বলব না’

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির। —ফাইল চিত্র

আরও পড়ুন: দাভোসে কাশ্মীর তোলায় ইমরানের কড়া সমালোচনা বিদেশ মন্ত্রকের

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের উপর ভয়াবহ আক্রমণ নামিয়ে আনার অভিযোগ ওঠে মায়ানমারের সেনাবাহিনী তাতমাদ-র বিরুদ্ধে। রাখাইন প্রদেশে বসবাসকারী অন্তত সাত লক্ষ রোহিঙ্গা নিজের দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তাঁদের অনেকেই আশ্রয় নেন প্রতিবেশী বাংলাদেশে। রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, রাখাইন প্রদেশে যা ঘটেছে তা গণহত্যারই শামিল। তদন্তকারীদের মতে, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর পরেও অন্তত পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বাস করছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত এক লক্ষ মানুষ গৃহহীন অবস্থায় রয়েছেন বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়ার অভিযোগ মায়ানমারে বসবসকারী রোহিঙ্গারা ‘ভয়ানক বিপদ’-এর মধ্যে রয়েছেন।

Rohingya Myanmar Aung San Suu Kyi International Court Of Justice ICJ Gambia Organization Of Islamic Cooperation Genocide

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}