জি২০-র শীর্ষ বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্ব আড়াআড়ি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলেও জি২০ ঘোষণাপত্রে স্থির ঐকমত্যে পৌঁছেছিল সদস্য দেশগুলি। আয়োজক দেশ ভারতের তরফে পেশ করা দিল্লি ঘোষণাপত্রে সায় দিয়েছিল আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের মতো সদস্য দেশগুলিও। তবে এই সংঘাতের প্রধান যে দুই কুশীলব, সেই রাশিয়া এবং ইউক্রেন জি২০ সম্মেলন নিয়েও পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিল।
রাশিয়া নয়াদিল্লির জি২০ বৈঠকে গৃহীত ‘ভারসাম্যের নীতি’তে আস্থা রাখার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু রবিবার বৈঠকের শেষ দিন এই নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা গোপন রাখল না ইউক্রেন। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রীতিমতো ওই ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করলেন। শুধু তাই নয়, লাল কালি দিয়ে ‘প্রয়োজনীয়’ সংশোধনও করে দিলেন। ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দেশের দাবি, এই সংশোধনগুলো করা না হলে ‘বাস্তব পরিস্থিতি’ স্পষ্ট হবে না।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “বর্তমান সময় কোনও ভাবেই যুদ্ধের সময় নয়।” রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “কোনও রাষ্ট্র ভূখণ্ড বাড়াতে অন্য দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবে।” তবে রাশিয়ার ‘আগ্রাসন’ নিয়ে কোনও লাইন বা অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করা হয়নি ওই ঘোষণাপত্রে। ইউক্রেন ওই অনুচ্চারিত অংশে রাশিয়াকে ‘আক্রমণকারী’ এবং ইউক্রেনকে ‘আক্রান্ত’ দেশ বলে অভিহিত করেছে। শেষে লাল কালিতে একটি বাক্যে লেখা হয়েছে, “সদস্য দেশগুলি সার্বিক ভাবে এই যুদ্ধের নিন্দা করছে এবং মস্কোকে এটি (যুদ্ধ) বন্ধ করার ডাক দিচ্ছে।” যদিও ইউক্রেন জি২০–র সদস্য রাষ্ট্র নয়। তাই বিশ্বের কূটনৈতিক মহলে এমন সংশোধনীর কোনও মান্যতাও নেই। ঘটনাচক্রে, আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলির দাবি সত্ত্বেও এমন কোনও চরম ঘোষণা উচ্চারিত হয়নি নয়াদিল্লির জি২০ শীর্ষ বৈঠকে।
রাশিয়ার প্রতি এই আপাত ‘নরম অবস্থান’ নেওয়ার নেপথ্যে নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কোর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘উষ্ণতা’কে দায়ী করছেন কেউ কেউ। কারও কারও মতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতাতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও কঠিন শব্দ উচ্চারিত হয়নি। প্রসঙ্গত, কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেন যাতে খাদ্যশস্য পাঠাতে পারে, তার জন্য তুরস্ক এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল মস্কো। কিন্তু প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলে চলতি বছরের জুলাই মাসে এই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যায় রাশিয়া। ফলে গোটা বিশ্বে, বিশেষত উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলিতে খাদ্যেশস্যের জোগান বাধাপ্রাপ্ত হয়। রাশিয়াকে এই চুক্তিতে ফেরাতে তৎপর রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাই রাশিয়ার প্রতি নরম অবস্থান নেওয়ার কৌশল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ এখনও পর্যন্ত চুক্তিতে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy