Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Vladimir Putin

Ukraine-Russia Conflict: তিন দিক ঘিরে সাঁড়াশি হামলা! ইউক্রেন দখলের চক্রব্যূহ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের

রুশ বাহিনীর তৃতীয় আক্রমণের কেন্দ্র হতে পারে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ক্রাইমিয়া। কৃষ্ণসাগরে ইতিমধ্যেই মোতায়েন রুশ রণতরী।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:২০
Share: Save:

প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল মাস খানেক আগেই। সামরিক মহড়ার অছিলায় বেলারুশে রুশ সেনার প্রবেশের পরেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া। গত করেক দিনে বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে রুশ ফৌজের গতিবিধি বলছে, পুরোপুরি যুদ্ধ শুরু হলে দ্রুত ‘তৃতীয় ফ্রন্টলাইন’ খুলে অসুবিধা হবে না ভ্লাদিমির পুতিনের। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ইউক্রেনের মতোই স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হয়েছিল বেলারুশ। কিন্তু গোড়া থেকেই সেখানকার সরকার মস্কো-ঘনিষ্ঠ।

বৃহস্পতিবার ভোরে পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ঘোষণার পরেই সীমান্তে সক্রিয় হয়েছে রুশ ফৌজ। সোমবার রাতে পুতিন ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়) স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই সেখানে রুশ সেনার অনুপ্রবেশেরও খবর মিলেছে। ওই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর বড় অংশ রুশ। মস্কো-পন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলিও সেখানে সক্রিয়। তাদের সাহায্যে এই এই অঞ্চল থেকেই রুশ সেনা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অভিযান শুরু করতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।

পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস থেকে কিয়েভে অভিযান চালানোর পথে পুতিনের বাহিনী ‘ইউক্রেনের সিলিকন ভ্যালি’ হিসেবে পরিচিত খারকীভের দখল নেবে বলে আশঙ্কা আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো-র। ইতিমধ্যেই কিয়েভ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনা এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্‌স্কির নেতৃত্বাধীন সরকারের মনোবল ভাঙাই এর উদ্দেশ্য।

রুশ বাহিনীর তৃতীয় আক্রমণের কেন্দ্র হতে পারে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ। সেখানে কৃষ্ণসাগরে ইতিমধ্যেই মোতায়েন হয়েছে বিপুল সংখ্যক রুশ রণতরী। ডুবোজাহাজ, ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেটের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু ‘অ্যাম্ফিবিয়ান ল্যান্ডিং ভেহিকল্‌’-ও। ন্যাটো-র সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দ্রুত ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে সেনা অবতরণের উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ। ক্রাইমিয়ার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি রুশ। তাদের নিয়ে গঠিত প্রায় ২৫ হাজার যোদ্ধার বাহিনীও রয়েছে সেখানে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যা পুতিনের সহায় হতে পারে। তা ছাড়া ক্রাইমিয়ার অন্তর্গত সেবাস্তিপোল রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এক মাত্র ‘উষ্ণ জলের বন্দর’। বছরভর ব্যবহারযোগ্য এই বন্দর থেকে রুশ নৌবাহিনী সহজেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে।

তবে এই মুহূর্তে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সেনা সমাবেশ রয়েছে মূল ইউক্রেন ভূখণ্ডের (ডনবাস সীমান্ত ব্যতীত) সীমান্তে। লক্ষাধিক সেনার পাশাপাশি কামান, ট্যাঙ্ক এবং ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। অন্তত এক ডজন বিমানঘাঁটিতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে মিগ-৩৫, সুখোই-৩৫ স্কোয়াড্রনগুলি। ম্যাক্সারের সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্র দেখিয়েছে, দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের উদ্দেশ্যে রুশ বায়ুসেনার এমআই-২৬-সহ ভারী হেলিকপ্টারগুলিও রয়েছে সেখানে।

পুতিনের ‘যুদ্ধ-ঘোষণার’ পরে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করলেও সেখানে সেনা পাঠানোর বিষয়ে এখনও চুপ ন্যাটো। এই পরিস্থিতিতে বহিরাগত বাহিনীর প্রত্যক্ষ সাহায্য ছাড়া রুশ হামলা ঠেকানো ইউক্রেনের পক্ষে কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Vladimir Putin Ukraine Russia War NATO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE