Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে যুক্তিহীন পরিবহণ নীতি নিচ্ছে ব্রিটেন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এটা কেন করলেন? আচমকা বাংলাদেশ থেকে আকাশ পথে পণ্য পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা। ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রী ছাড়া আর সব কিছু যাবে জাহাজে, বিমানে নয়। তা কী করে হয়! এত সময় কোথায়। রোজকারের সব্জির সমুদ্রযাত্রা সম্ভব নয়। পচে নষ্ট হবে।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ১৭:১৮
Share: Save:

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এটা কেন করলেন? আচমকা বাংলাদেশ থেকে আকাশ পথে পণ্য পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা। ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রী ছাড়া আর সব কিছু যাবে জাহাজে, বিমানে নয়। তা কী করে হয়! এত সময় কোথায়। রোজকারের সব্জির সমুদ্রযাত্রা সম্ভব নয়। পচে নষ্ট হবে। বাংলাদেশ থেকে ফি-বছর এক হাজার কোটি টাকার সব্জি যাচ্ছে বিদেশে। তার অর্ধেক যায় যুক্তরাজ্যে। রফতানি হয় বলে কৃষকরা ভাল দামও পান। সেটা বন্ধ হলে তাঁদের তো মাথায় হাত। লোকসান সামলানোর বিকল্প পথ কোথায়? অতিরিক্ত সব্জি রাস্তায় ফেলে হা-হুতাশ করা ছাড়া? ক্যামেরন শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির অভিজ্ঞ নেতা। রাজনীতিতে শ্রমিক-কৃষকের ভূমিকা তাঁর জানা। তাঁর সিদ্ধান্তে শ্রমিকরাও মরবে। পোশাক শিল্প প্রমাদ গুনবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ভীষণ ভাবে দাঁড়িয়ে রফতানি বাণিজ্যের ওপর।

বাংলাদেশকে ব্যানানা রিপাবলিক বলা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য রফতানির উপর অর্থনীতি নির্ভরশীল। সেখানে আঘাত এলে সইবে কী করে? নিষেধাজ্ঞার কারণও একেবারেই স্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তার অভাব। পণ্যে আবার নিরাপত্তা কী? যে দেশ পণ্য নেবে, তারা তো দেখে বুঝে হিসেব করে নেবে। মাঝখানে খোয়া গেলে দায় তাদের নয়। তারা চেপে ধরবে রফতানিকারক দেশকে। বিমানের চেয়ে জাহাজে কি নিরাপত্তা বেশি? ঢেউ ভেঙে দীর্ঘ সফরে পণ্য এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ তো আরও অনেক বেশি। সব ঠিকঠাক থাকাটাই আশ্চর্যের।

সব পণ্যেই বিমা করা থাকে। মাঝখানে হারালে দায় বিমা কোম্পানির। বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি সেদিক থেকে যথেষ্ট দায়বদ্ধ। নিরাপত্তা নিয়ে যদি প্রশ্নই ওঠে, বিমান বন্দরে নজরদারি বাড়ালেই হয়। তারও ব্যবস্থা হয়েছে। ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে প্রতি দিন সেখানকার অফিসে যাচ্ছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সঙ্গে থাকছেন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় আমেরিকাও উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে তারা প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। বাংলাদেশের পণ্য যে সব দেশে যায় তারা সবাই যদি সন্দিহান হয়ে ওঠে তাহলে ক্ষতি আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন

ওরা ভয়ে চুপ

এর আগে অস্ট্রেলিয়াও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাতে রফতানি বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়েনি। তাদের বাজার খুব ছোট। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় বিপদ অনেক। বাংলাদেশের পোশাক রফতানির ১২ শতাংশ আয় যুক্তরাজ্য থেকে। গত অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক। চলতি বছরে এর মধ্যেই আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। রফতানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে লন্ডনের রুট বদলে অন্য দেশে পণ্য পাঠাতে হবে সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইল্যান্ড, দুবাই দিয়ে। তাতে খরচ অনেক বাড়বে। লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তাঁর আশার ভিত্তি কী তিনি বলেননি। মন্ত্রীর কথায় উদ্বেগ কমেনি। রফতানি এক দিন বন্ধ থাকা মানে ব্যাপক ক্ষতি। রফতানি বাণিজ্যে শুধু বিদেশি মুদ্রা আয়ই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে অসংখ্য মানুষের অন্নসংস্থান। ব্রিটেন কী সে কথা ভাববে না!

অন্য বিষয়গুলি:

bangladesh import transport policy UK
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy