গোটা নির্বাচনী প্রচারে প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনকে একটি প্রসঙ্গ নিয়ে বারবার বিঁধে এসেছেন তিনি। প্রাক্তন মার্কিন বিদেশসচিব তাঁর ব্যক্তিগত ই-মেল সার্ভারে জাতীয় নিরাপত্তার গোপন তথ্য কেন ভরে রাখতেন, তার জন্য জবাবদিহিও চেয়েছেন বহু বার। কিন্তু এ বার নিজেও সেই প্যাঁচেই পড়েছেন। একটি সাম্প্রতিক বৈঠকে রাশিয়ার কাছে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা-নথি ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। গত কাল একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে আমেরিকা-সহ গোটা পশ্চিমী দুনিয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হোয়াইট হাউস অবশ্য কালই তড়িঘড়ি সাংবাদিকদের ডেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ওই দৈনিকের দাবি সম্পূর্ণ ভুল। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডিনা পাওয়েলের বক্তব্য, সন্ত্রাস দু’দেশেরই সমস্যা। বৈঠকে তা নিয়েই কথা হয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য বিতর্ক বাড়িয়েছেন টুইটারে। আজ সকালে তিনি লিখেছেন, ‘‘রাশিয়ার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে আমার।’’
ঘটনা গত সপ্তাহের। এফবিআই প্রধান জেমস কোমিকে তখন সদ্য সরিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঠিক তার পরের দিনই ওভাল অফিসে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং আমেরিকায় রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গে কিসলিয়াকের সঙ্গে এক গোপন বৈঠক করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত অনুরোধেই ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানেই এক মিত্র দেশের গোয়েন্দা সূত্র থেকে পাওয়া ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস নিয়ে অত্যন্ত গোপন তথ্য রুশ প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কোন দেশ আমেরিকাকে সেই তথ্য সরবরাহ করেছিল, তা প্রকাশ করেনি ওই দৈনিক। তবে প্রতিবেদনটিতে তারা লিখেছে, এর ফলে ওই দেশটি তো বটেই, বাকি মিত্র দেশগুলিও আমেরিকার সঙ্গে এই ধরনের গোপন, সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করতে দু’বার ভাববে।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে বারবার। আর এই তদন্তের নেতৃত্বেই ছিলেন প্রাক্তন এফবিআই প্রধান কোমি। আচমকা কোমিকে সরানো আর তার ঠিক পরের দিনই এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে গোপন নথি ফাঁসের মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দৈনিকটি।
সে দিনের ওই বৈঠকে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের ঢোকার অনুমতি ছিল না। তবে রাশিয়ার সরকারি সংস্থার এক চিত্রসাংবাদিক আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। রুশ সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে বেরিয়েওছে হাসিমুখে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাম্প এবং লাভরভের ছবি। মার্কিন দৈনিকটির দাবি, আইএসের গতিবিধি সংক্রান্ত বিস্তারিত গোয়েন্দা-তথ্য রাশিয়ার হাতে তুলে দিলে সে তথ্য ভাঙিয়ে ভবিষ্যতে অনেক বড় সুবিধে নিতে পারে পুতিন সরকার। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্রের অবশ্য দাবি, ট্রাম্প সে দিন এমন কোনও তথ্য রাশিয়াকে দেননি, যাতে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হয়।
তথ্য ভাগাভাগির কথা আজ প্রথমে নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু পরের টুইটেই আবার দাবি করেছেন, সন্ত্রাসবাদ আর বিমানে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার ব্যবহারের সময় দেশের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়েই আলোচনা হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজে যুক্তি দিলেও দেশের একাধিক প্রাক্তন ও বর্তমান গোয়েন্দা কর্তা কিন্তু মনে করছেন, এ ভাবে মুখ খুলে কার্যত আমেরিকার সুরক্ষার উপরই প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলিয়ে দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy