Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Donald Trump

মধ্যস্থতা বিতর্কে উত্তাল সংসদ, মোদী এমন অনুরোধ করেননি ট্রাম্পকে, বিবৃতি কেন্দ্রের

কাশ্মীর বিবাদকে ভারত বরাবরই দ্বিপাক্ষিক সমস্যা বলে মনে করে। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান।

ট্রাম্পের মন্তব্যে তোলপাড় সংসদ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

ট্রাম্পের মন্তব্যে তোলপাড় সংসদ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১২:৪৯
Share: Save:

ট্রাম্পের কাশ্মীর-মধ্যস্থতা মন্তব্যে বিতর্কের আঁচ বা়ড়তে দেখে ইতি টানার চেষ্টা ওয়াশিংটনের। মঙ্গলবার, মার্কিন বিদেশমন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, ‘কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের বিষয়। তা নিয়ে দু’দেশের আলোচনা শুরু হলে স্বাগত।’ তবে এ জন্য সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানকে যে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে সেই বার্তাও দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে সে দেশের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য।

সোমবার ইমরান খানকে পাশে নিয়ে ট্রাম্পের কাশ্মীর-মধ্যস্থতা মন্তব্য নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। কাশ্মীর বিবাদকে ভারত বরাবরই দ্বিপাক্ষিক সমস্যা বলে মনে করে। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেই চুক্তি এবং লাহৌর ঘোষণাপত্রই আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত। ফলে, সোমবার করা ট্রাম্পের মন্তব্য ঝড় তোলে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতেও। মোদী দেশের স্বার্থ ‘বলি দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন’ বলে তোপ দাগেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। মঙ্গলবার, সেই ঝড় আছড়ে পড়ে সংসদেও। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতির দাবিও তোলেন। ট্রাম্পের এই দাবি অবশ্য খারিজ করে দেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। রাজ্যসভায় তিনি বলেন, ‘‘ভারতের তরফে ট্রাম্পকে এমন কোনও প্রস্তাবই দেওয়া হয়নি।’’

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর, ওভাল অফিসে ইমরানের পাশে বসেই ট্রাম্প মধ্যস্থতার কথা তোলেন। পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি দাবি করেন, ‘‘জাপানের ওসাকায় জি২০ সামিটে মোদীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি জানতে চান, আমি মধ্যস্থতা করতে রাজি কি না। আমি প্রশ্ন করি, কোন বিষয়ে। তিনি বলেন, কাশ্মীর। কারণ, বিবাদটা অনেক দিন ধরে চলছে। আমি ওঁকে জানাই, মধ্যস্থতা করতে পারলে আমি খুশিই হব।’’ এ কথা শুনে ইমরান বলেন, ‘‘এটা হলে ১০০ কোটি মানুষের শুভেচ্ছা আপনার সঙ্গে থাকবে।’’

আরও পড়ুন: বেজিংকে ঠেকাতে মোদী ভুটানে যাচ্ছেন​

ট্রাম্পের এই দাবিতে পাকিস্তান খুশি হলেও, তা নিয়ে দিল্লিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি নস্যাৎ করে দেয় নয়াদিল্লি জানায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন কোনও অনুরোধ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক স্তরেই আলোচনা হবে, এটাই আমরা ধারাবাহিক ভাবে বলে এসেছি।’’ ভারতের বয়ানের পরেই কার্যত পাশা উল্টে যায়। বিষয়টি কোথায় গিয়ে ধাক্কা মেরেছে তা আন্দাজ করেই এ বার ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা মার্কিন প্রশাসনের। এ বার ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামল মার্কিন বিদেশমন্ত্রক।

মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘কাশ্মীর বারবরই ভারত ও পাকিস্তান এই দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা নিয়ে দু’দেশ আলোচনা শুরু করলে স্বাগত জানাবে ট্রাম্প সরকার। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যও করবে। ’’ সেইসঙ্গে, আরও একধাপ এগিয়ে ইসলামাবাদকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার পরামর্শও দিয়েছে ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুন: ভিনগ্রহীদের আস্তানা, না আমেরিকার গোপন সামরিক ঘাঁটি! কী রয়েছে 'এরিয়া ৫১'-এ​

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে সে দেশেও। মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য ব্র্যাডলি জেমন শেরম্যান টুইটে বলেন, ‘‘প্রত্যেকেই জানেন, কাশ্মীর নিয়ে কখনই তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি মেনে নেয়নি ভারত। ট্রাম্পের এই মন্তব্য অপেশাদার ও বিভ্রান্তিকর। আমি এ জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রীঙ্গলার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy