যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার ছবি। ছবি: রয়টার্স।
গাজ়া শহর থেকে ‘বস্তায় ভরে’ ফেরত পাঠানো হবে ইজ়রায়েলি সেনাকে। ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) গাজ়া শহরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে বলে দাবি করার পর পাল্টা এমনটাই হুমকি দিয়েছে প্যালেস্তানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
আইডিএফ-এর দাবি, তাদের স্থলবাহিনী গাজা শহরকে সম্পূর্ণ ভাবে ঘিরে ফেলেছে। হামাস সংগঠনের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলাও চালানো হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ইজ়রায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ‘‘ইজ়রায়েলি সেনা গাজ়া ভূখণ্ডের প্রাণকেন্দ্র গাজ়া শহরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত শহরে সংগঠনটির ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলাও চলছে। যুদ্ধবিরতির কোনও সম্ভাবনা এখনও নেই।’’ এর পরেই পাল্টা হুমকি বার্তা দিয়েছে হামাস। গাজ়া শহরে প্রবেশ করা ইজ়রায়েল বাহিনীকে ‘বস্তায় ভরে’ ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছে তারা।
গাজ়ায় ক্রমেই ভয়াবহ যুদ্ধে জড়াচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইজ়রায়েলি সেনা। ইতিমধ্যে ইজ়রায়েলি সেনার হামলায় গাজ়ায় মারা গিয়েছেন অন্তত আট হাজার জন। যার মধ্যে অনেকেই শিশু। মঙ্গলবার গাজ়ার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ায় ইজ়রায়েল যে রকেট হামলা চালিয়েছিল, তাতে ১৯৫ জন প্যালেস্তিনীয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে হামাস। এই প্রসঙ্গে অবশ্য ইজ়রায়েলের দাবি, প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠনটির ঘাঁটি লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। ইজ়রায়েল এ-ও দাবি করেছে যে, তাদের হামলায় হামাসের দুই কম্যান্ডার নিহত হয়েছেন। যদিও হামাসের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
অন্য দিকে, লেবানন থেকে সীমান্ত সংলগ্ন ইজ়রায়েল ভূখণ্ডে ২৫ থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা চালিয়েছে সে দেশের জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাও। ইজ়রায়েলের সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ওই এলাকায় বেশ কিছু গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। তাতে আগুন ধরে গিয়েছে। তবে হতাহতের খবর প্রকাশ্যে আসেনি। এর পরে হিজবুল্লার ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালাতে শুরু করেছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েল ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলার কথা স্বীকার করে হিজবুল্লা জানিয়েছে, সীমান্ত সংলগ্ন শেবায় ইজ়রায়েলের সেনার ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন পাঠিয়েছিল তারা। ইজ়রায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা স্বীকার করেছে হামাসের আল কাসাম ব্রিগেডও।
পাশাপাশি, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজ়ার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, শরণার্থী শিবিরে ইজ়রায়েলি হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২০ জন নিখোঁজ। ৭৭৭ জনেরও বেশি প্যালেস্তিনীয় আহত। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। বুধবারই গাজ়ার দক্ষিণাংশ থেকে রাফা সীমান্ত ধরে বেশ কয়েক জন বিদেশি নাগরিক মিশরে গিয়েছেন। অসুস্থদের এবং হামলায় আহতদেরও অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে মিশরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু দিন রাফা সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল মিশর। মিশর প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল যে, সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়া হলে প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যেরা ইজ়রায়েলি হানা থেকে রক্ষা পেতে তাদের দেশে এসে আশ্রয় নেবেন। পরে যদিও গাজ়ায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত ভাবে সীমান্তের দরজা খুলেছিল মিশর। বুধবার মানুষের যাতাযাতের জন্যও সীমিত ভাবে রাফা সীমান্ত খুলল নীলনদের দেশ। মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্যালেস্তাইনের আহত ২১ জন এবং ৩৪৪ বিদেশি নাগরিক সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। যার মধ্যে ৭২ জন শিশু ছিল।
প্যালেস্তিনীয়দের জীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইজ়রায়েল সেনার গাজ়ার জাবালিয়া উদ্বাস্তু শিবিরে হামলা চালানো নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন। বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক আইন’ ভঙ্গ করেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। এটা ‘যুদ্ধাপরাধ’। এর মধ্যে গাজ়ার হাসপাতালগুলিতে জ্বালানি শেষ হয়েছে বলে খবর। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন ইজ়রায়েল সেনার প্রধান। জানিয়েছেন, মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচাতে গাজ়ার হাসপাতালে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। তবে দেখা হবে, তা যেন কোনও প্রকারেই হামাসের হাতে না যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy