(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং তাঁর পুত্র সাজিব ওয়াজিদ জয়। —ফাইল চিত্র
আন্দোলনের চাপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এই পরিস্থিতিতে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানাবিধ জল্পনার মাঝে পুত্র সাজিব ওয়াজিদ জয় একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, তাঁর মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এত পরিশ্রম করার পরেও যে ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন হল, তাতে তিনি (হাসিনা) অত্যন্ত হতাশ এবং বীতশ্রদ্ধ।
হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন তাঁর উপদেষ্টা ছিলেন পুত্র জয়। সোমবার হাসিনার পদত্যাগের পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, রবিবার থেকেই পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন তাঁর মা। শেষমেশ পরিবারের চাপে নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশে ছেড়েছেন তিনি। জয় বলেন, ‘‘উনি (হাসিনা) বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। উনি যে সময়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন করুণ অবস্থা ছিল দেশের। বাংলাদেশ গরিব দেশ ছিল। কিন্তু আজ বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম শক্তি। উনি খুবই হতাশ।’’ কড়া হাতে আন্দোলন দমনের যে অভিযোগ উঠেছিল সরকারের বিরুদ্ধে, তা-ও অস্বীকার করেছেন জয়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে পুলিশকে পিটিয়ে মারা হচ্ছিল। গতকাল পর্যন্ত ১৩ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জনতা যদি পুলিশকে এ ভাবে পিটিয়ে মারে তো পুলিশ কী করবে?’’
সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে ঢাকার বাসভবন তথা ‘গণভবন’ ছেড়েছিলেন হাসিনা। সন্ধ্যা নাগাদ জানা যায়, তিনি ভারতে পৌঁছেছেন। সূত্রের খবর, দিল্লি লাগোয়া গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেস বা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নেমেছে তাঁর বিমান। একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন হাসিনা। তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক দিন দিল্লিতেই ‘সেফ হাউসে’ থাকতে পারেন তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ ‘হামলা’য় একের পর এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় তারা।
‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘিরে যে অশান্তির সূত্রপাত হয়, তাতে কেবল রবিবারেই অন্তত ৯৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ১৪ জন পুলিশকর্মীও। হামলা, পাল্টা হামলায় জখম হন শতাধিক মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাসকদল আওয়ামী লীগের কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy