The Most Infamous Serial Killer Nannie Doss Killed Her Four Husbands to Grab Insurance Money dgtl
nannie doss
বিমার টাকায় বিলাসী জীবন কাটাতে চার স্বামী-সহ ১১ জনকে খুন করে এই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার
এ বার এটা যেন তার কাছে ‘খেলা’ হয়ে উঠল। সে রূপের ফাঁদে বশ করত যুবকদের। তার পর বিয়ে। বিয়ের পরে ন্যানি নিশ্চিত হয়ে নিত, স্বামীর অবর্তমানে সে কত টাকা পাবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ১৩:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
নিজের চার স্বামী-সহ অন্য পরিজনের রক্তে লাল হয়েছিল ন্যানি ডসের হাত। যদিও তার আপাত নিষ্পাপ, হাসিখুশি মুখ দেখে বোঝার উপায় ছিল না, ভিতরে লুকিয়ে আছে এক নৃশংস খুনি। আমেরিকায় ন্যানির জন্ম হয় ১৯০৫ সালের ৪ নভেম্বর।
০২১৫
বদমেজাজি বাবার জন্য ন্যানি এবং তার ভাইবোনেরা বঞ্চিত হয়েছিল সুস্থ, স্বাভাবিক শৈশব থেকে। অতিরিক্ত শৃঙ্খলার চাপে দমবন্ধ হয়ে আসত তাদের সবার। এই অস্বাভাবিক শৈশব প্রভাব ফেলেছিল ন্যানির জীবনে।
০৩১৫
শৈশবে এক বার মাথায় আঘাত পেয়েছিল সে। এর পর থেকে প্রায়ই চরম হতাশার শিকার হত ন্যানি। মানসিক স্থিতি খুঁজে পায়নি বাকি জীবনের জন্য। ভালবাসত লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে থাকতে। এ রকম আচরণ দেখে তার বাবা বিয়ে মাত্র ষোলো বছর বয়সেই ন্যানির বিয়ে দিয়ে দিলেন।
০৪১৫
ন্যানির প্রথম স্বামীর নাম ছিল চার্লি ব্র্যাগস। কাজ করতেন লিনেন কারখানায়। চার্লির মা ছিলেন সিঙ্গল পেরেন্ট। তিনি নাকি সংসারের সব বিষয়ে কথা বলতেন। অভিযোগ ছিল ন্যানির। স্বামী ও শ্বাশুড়ির সঙ্গে বেশি দিন থাকল না সে।
০৫১৫
১৯২৩ থেক ১৯২৭, এই চার বছর স্থায়ী হয়েছিল ন্যানির প্রথম বিয়ে। চার বছর চার মেয়ের মা হয়েছিল সে। কিন্তু মাতৃত্বও তাঁর জীবনে স্থিরতা আনতে পারেনি। বরং, চরম হতাশায় নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সে।
০৬১৫
এর মধ্যেই খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে মারা যায় তাঁর মেজো ও সেজো মেয়ে। সে সময় মাঝে মাঝেই বাড়ি ছেড়ে থাকতেন ব্র্যাগস। তাঁর মা মারা যাওয়ার পরে অন্য এক মহিলার সঙ্গে নতুন করে ঘর বাঁধেন তিনি। দুই মেয়েকে নিয়ে বাবা মায়ের কাছে ফিরে যায় ন্যানি।
০৭১৫
ন্যানির দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন রবার্ট ফ্র্যাঙ্কলিন হ্যারেলসন। তাঁকে ন্যানি বিয়ে করেন ১৯১৯ সালে। বিয়ের পর ন্যানি আবিষ্কার করে তার এই স্বামী চূড়ান্ত নেশাখোর এবং তার আগে অপরাধের রেকর্ড আছে। অসহ্য দাম্পত্যে তিতিবিরক্ত ন্যানি দ্বিতীয় স্বামীকে খুন করে খাবারে ইঁদুর মারার বিষ মিশিয়ে।
০৮১৫
এর পর বিমার টাকায় বেশ কয়েক দিন তার হেসেখেলে চলে গেল। এ বার এটা যেন তার কাছে ‘খেলা’ হয়ে উঠল। সে রূপের ফাঁদে বশ করত যুবকদের। তার পর বিয়ে। বিয়ের পরে ন্যানি নিশ্চিত হয়ে নিত, স্বামীর অবর্তমানে বিমাবাবদ সে কত টাকা পাবে।
০৯১৫
ন্যানির তৃতীয় স্বামী ছিলেন অ্যার্লি ল্যানিং। অ্যালকোহোলিক এই ব্যক্তি মারা যান হৃদরোগে। এর পর এক দিন অগ্নিকাণ্ডে তাঁদের বাড়ি পুড়ে যায়। ন্যানি সে সময় বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনার জেরে অবশ্য লাভবানই হন তিনি। পেয়ে যান দুর্ঘটনা বাবদ বিমার টাকা।
১০১৫
পরে পুলিশি জেরায় ন্যানি স্বীকার করে, হৃদরোগ নয়, এই মৃত্যুর পিছনেও দায়ী ছিল সে নিজে। বিষপ্রয়োগ করেই খুন করেছিল তৃতীয় স্বামীকে।
১১১৫
চতুর্থ স্বামী রিচার্ড মর্টনের খোঁজ ন্যানি পায় একটি ডেটিং ক্লাব থেকে। তার সুরাসক্তি ছিল না। কিন্তু একাধিক নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁকে এবং তাঁর মাকে তিন মাসের ব্যবধানে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করে ন্যানি।
১২১৫
পঞ্চম বার ন্যানি বিয়ে করে স্যামুয়েল ডসকে। তখন স্যামুয়েল ছিলেন পরিবার পরিজনহীন। বিয়ের কয়েক দিন আগেই ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু হয় তাঁদের সবার। স্যামুয়েলের সঙ্গে ন্যানির বিরোধ শুরু হয় বই পড়া নিয়ে। ন্যানির অভিযোগ ছিল, তাঁর রোমান্টিক গল্প ও উপন্যাস পড়া পছন্দ করতেন না স্যামুয়েল। এই বিরোধিতার জেরে জমতে থাকে আক্রোশ।
১৩১৫
১৯৫৪ সালের অক্টোবরে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় স্যামুয়েলের। মৃত্যুর ধরন দেখে সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরীক্ষায় স্যামুয়েলের দেহে প্রচুর আর্সেনিক পাওয়া যায়। এর পর জল গড়ায় পুলিশি তদন্ত অবধি। এ বার ধরা পড়ে ন্যানি। পুলিশের ফাঁদে আটকে গিয়ে অধরাই থেকে যায় এ বারের বিমার টাকা আত্মসাৎ করার ফন্দি।
১৪১৫
পুলিশি জেরায় ন্যানি স্বীকার করে তার চার স্বামী, দ্বিতীয় স্বামীর মা, তার নিজের মা, বোন এবং নাতিকে খুনের অপরাধ। ১৯৫৪ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। মহিলা বলে দেওয়া হয়নি মৃত্যুদণ্ড।
১৫১৫
কারাগারে বন্দি থাকার সময় ১৯৬৫ সালের ২ জুন লিউকেমিয়ায় মারা যায় এই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। ১৯২০ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত, ৩৪ বছরে ৪ জন স্বামী-সহ মোট ১১ জনকে খুন করেছিল ন্যানি। অপরাধের নথিতে সে কুখ্যাত হয়ে আছে ‘দ্য ব্ল্যাক উইডো’ নামে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)